পঞ্চগড়ে তারুণ্যের উৎসব, মঞ্চস্থ হলো পশুর বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ে মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত তারুণ্যের উৎসব ইভেন্ট ইলাভেন পর্বের রাত্রীকালিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় পঞ্চগড় স্টেডিয়ামে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আঞ্চলিক, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, বাউল, লালন এবং উপজাতি গোষ্ঠীর নাচ গান নিয়ে গ্রন্থিত সাংস্কৃতিক সন্ধার গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন পঞ্চগড় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন (স্টিভ) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিশেষ আর্কষণ ছিলো, রহিম আব্দুর রহিম রচিত ও নির্দেশিত নাটক "পশুর বয়ান"।
পঞ্চগড় বিদ্রোহী শিশু-কিশোর থিয়েটার প্রযোজিত নাটকটির মূলভাবে উঠে এসেছে এক অপূর্ব কাহিনী, "নদীনালা, গাছ-গাছড়া, পাহাড়- পর্বত, আলো-বাতাস যার যার অবস্থান থেকে নিজেকে বড় ভেবে অহংকার করা শুরু করে। এক পর্যায় এই নিয়ে পরস্পরের মধ্যে ব্যাপক তর্কযুদ্ধ শুরু হয়, সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিজেকে রাজা দাবি করে।
এই বিবাদমান ঘটনার মীমাংসা করতে গিয়ে 'আকাশ' সবার উদ্দেশ্য বলে, আমরা একে অন্যের পরিপূরক,আমাদের কোন রাজা নেই,আমরা সবাই রাজা। তার কথা সবাই মেনে নেয়। কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখন, যখন বনের পশু-পাখি, বাঘ-ভাল্লুক, হাতি ঘোড়া, প্রাণ-প্রাণিরা মানুষের ধ্বংসলীলায় পড়ে খাবার-দাবারে অভাবে লোকালয়ে প্রবেশ করে মানুষের উপর চড়াও হয়। মানুষ জান বাঁচাতে পশুরাজ সিংহের কাছে বিচার প্রার্থনা করে। পশুরাজ্যের বিচারালয়ে শুরু হয় বিচার। বিচার প্রার্থী মানুষ পশুরাজের কাছে নিজেকে নিরীহ-নিরাপরাধ বলে জোরালো দাবী করে।
অন্যদিকে আক্রমণকারী বাঘ মানুষ জাতিকে পশুর চেয়েও হিংস্র বলে জোরালো বক্তব্য দেয়।পশুরাজ ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করা শুরু করে। সাক্ষ্য প্রমাণে বনরাজ্যের প্রাণ-প্রাণি, প্রকৃতির গাছপালা, নদী-নালা সবাই যে মানুষ কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে তা স্পষ্ট হওয়ায়, পশুরাজ তার রায় ঘোষণায় মানব জাতিগোষ্ঠীর হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ খিস্টানদের মানুষ হওয়ার আহ্বান জানান। " জ্ঞানগর্ব, বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিষয়ক নাটকটির শ্রেষ্ঠাংশে যারা অভিনয় করেছে তারা হলো,পঞ্চগড় বিষ্ণুপ্রসাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিদ ইসাম সরকার ' চরিত্র পশুরাজ,' 'রয়েল বেঙ্গল টাইগার'চরিত্রে ৮ম শ্রেণির মো. ইমরান শাহরিয়ার আহাদ,জল চরিত্রে ৮ম শ্রেণির শাহরিয়ার রহমান শ্রাবণ, মানব চরিত্রে ৮ম শ্রেণির তাহমিদ আলী, আকাশ চরিত্রে ৭ম শ্রেণির মোনাব্বেরুল খান নাজিব, পোষ্যপ্রাণি 'কুকুরের' চরিত্রে আবু হুরায়রা তন্ময়, 'নদী' চরিত্রে অষ্টম শ্রেণির মো.মেহেদী হাসান,হাতি চরিত্রে ১০ম শ্রেণির রেজোয়ান তাসির রুপক,পাহাড় চরিত্রে ৭ম শ্রেণির আব্দুল্লাহ আল গালিব,গৃহপালিত প্রাণি গরু'র চরিত্রে ৮ম শ্রেণির মুনতাসিফ জুনাইদ সাওম, বায়ুর চরিত্রে ৮ম শ্রেণির শাহরিয়ার নবী উল্লাস, গাছের চরিত্রে ৮ম শ্রেণির মো.লাবিব আল হাসান।নাটকটির নেপথ্যের শ্রেষ্ঠাংশে ছিলেন আলোক প্রক্ষেপণে এসএসসি পরীক্ষার্থী মো.নাছিবুর রহমান নাবিল, কোরিওগ্রাফ পরিকল্পনা ও রূপসজ্জায় ১০ম শ্রেণির প্রসেনজিৎ পাল বিশাল, আবহ সঙ্গীতে ৮ম শ্রেণির মো.নাজমুন হুদা নাফিম কোরিওগ্রাফে যথাক্রমে ৮ম শ্রেণির শাহিনুর ইসলাম ও মো. লাবিব হাসান।
(এআর/এএস/জানুয়ারি ২৪, ২০২৫)