তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পৌরসভার সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন পৌরবাসী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করার পর থেকেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্ত হয়। তারপর ২৬ সেপ্টেম্বর এ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের  অপসাণ করা হয়। এরপর থেকে স্থবির হতে থাকে পৌরসভার নাগরিক সেবা কার্যক্রম। এখন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম সনদ, মৃত্যুসনদ, নাগরিক সনদপত্র, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট গ্রহণসহ নাগরিক সেবা পেতে নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

পৌর কার্যক্রম সচল রাখতে প্রশাসক নিয়োগের পাশাপাশি একাধিক সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। অধিকাংশ কর্মকর্তা সপ্তাহে ১ দিন, ১৫ দিনে ১ দিন বা মাসে ১ দিন সেবা প্রদান করেন। একারণে পৌরবাসী কাংখিত সেবা পাচ্ছেন না। তারা সেবা না পেয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

মুকসুদপুর পৌরসভার বাসিন্দা খবিরউদ্দিন মিয়া, সবুরণ বেগম, সামছুল আরেফীন বলেন, সনদ প্রাপ্তির জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের (কমিশনার) সুপারিশ নিতে হতো। তার স্থলে নিয়োগ প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার সুপারিশ নিতে হয়। এসব কর্মকর্তারা সপ্তাহে ১ দিন, ২ সপ্তাহে বা মাসে ১ দিন এসব কাজ করেন। আবার কোন কোন কর্মকর্তা কাজ করেন না। এতে নাগরিক সেবায় আমাদের ভোগান্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে পৌরবাসীর। সনদ পেতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে পৌরসভার সচিব মোঃ মাসুদ আলম বলেন, পৌর সমস্যা সমাধানে নিরলস ভাবে কাজ করা হচ্ছে। এ পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের ৯ জন পুরুষ এবং সংরক্ষিত ৩ জনসহ মোট ১২ জন জনপ্রতিনিধির কাজ স্টাফদের করতে হচ্ছে। প্রশাসকের কাজ সহজ করতে ৬ জন সরকারি কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাই পৌরসভার কাজে সময় দিতে পারেন না। এ কারণে পৌর সেবার গতি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভার প্রশাসক তাসনিম আক্তার বলেন, আমি সবেমাত্র এ উপজেলায় যোগদান করেছি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পৌরসভায় শৃঙ্খলা আনতে চেষ্টা করছি। যোগদানের পর এখন পর্যন্ত পৌরসভায় সভা করতে পারিনি। আমি পৌরসভার সব নাগরিক সেবা সহজে দিতে পৌর কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য বলেছি। তবে সঠিক ও নির্ভুল কাজ করতে সময়ের প্রয়োজনও রয়েছে। এ সেবা পেতে পৌরবাসীকে সার্বিক সহযোগিতা করারও অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২৫)