বোয়ালমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, বাজার রক্ষায় মাইকিং
বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সস্রাইল বাজার সংলগ্ন এলাকায় মাঝকান্দি ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ট্রাকের সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এতে আহত হয় তিন জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ইসরাফিল মোল্ল্যার ছেলে সস্রসাইল বাজারের ব্যবসায়ী শামীম মোল্লা বোয়ালমারী থেকে মোটর সাইকেল যোগে সহস্রাইল বাজারে আসার সময় পথিমধ্যে বালু বোঝাই একটি ট্রাকের সাইড না দেওয়ায় ট্রাক ড্রাইভার ইলিয়াসের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মোটর সাইকেল আরোহী শামীম ও ট্রাক ড্রাইভার ইলিয়াসের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ সময় ট্রাক ভর্তী বালুর মালিক শেখর ইউনিয়নের জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান বিশ্বাস বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করে, এতে মোটর সাইকেল আরোহী শামীম তার উপরও ক্ষিপ্ত হন। তাৎক্ষণিক শামীম সমর্থিত লোকজন জামায়াত নেতার উপরে অতর্কিত হামলা চালায়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকার লোকজন শামীম গ্রুপকে প্রতিহত করেন। এতে আহত হন শামীম সহ দুইজন।
এ ঘটনার পর শামীম গ্রুপ শতাধিক দেশীয় অস্র (ঢাল, সরকি, রামদা, টেটাসহ লোকজন এনে রাতেই মহড়া দেয়। এতে পুরো এলাকা জুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে রাতেই বোয়ালমারী থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এদিকে শামীমের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে তার সমর্থীত সহস্রাধিক লোক দেশীয় অস্রসজ্জিত হয়ে সস্রাইল বাজারে হামলার পরিকল্পনা করে। এ সময় শামীম সমর্থীত কিছু লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একত্রিত হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সস্রাইল বাজারের ব্যবসায়ীরা মাইকিং করে বাজার রক্ষার্থে সবাইকে একত্র হওয়ার ঘোষনা দেন।
অপরদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি সকালে ঘটনাস্থলে বোয়ালমারী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম রসুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে, পরে সেটা এলাকার আধিপত্য বিস্তার পর্যায়ে চলে যায়। খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন সেখানের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তীতে যাতে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার এমন সংঘর্ষের নিন্দা জানিয়েছেন সস্রাইল বাজার বণিক সমিতির সভাপতি চুন্নু বিশ্বাস। তিনি বলেন বাজার কেন্দ্রিক সামান্য অপ্রীতিকর ঘটনা বাজারে পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাজারের ব্যবসায়ীরা। আতঙ্কে দিন পার করেন নারী শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ রকম ঘটনার ভবিষ্যতে পূর্নরাবৃত্তি না হয় সেদিকে সচেতন থাকতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
(কেএফ/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০২৫)