স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : বেশ কয়েকদিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে বর বর সাজ। প্রত্যেক বিভাগে তাড়াহুড়া চলছে।শীতের মৌসুম আর কলেজে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। যে যার জায়গা থেকে কাজ করছেন পিঠা উৎসবে নিজের বিভাগকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে দেখতে। শিক্ষার্থীরা মিলে মিশে পিঠাপুলি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টের মাধ্যমে নিজেদের উচ্ছাস প্রকাশ করছেন।

এর মধ্যে রোববার সকালেই আসে সেই আনন্দঘন মূহুর্ত। দক্ষিণ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ(এম এম কলেজ) ক্যাম্পাসে তারুণ্যের উৎসব ২৫ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয় পিঠা উৎসব। সকাল থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। কেউ বা শাড়ি পরে পিঠার পাত্র হাতে আবার কেউবা পাঞ্জাবি পরে স্টল সাজাতে ব্যস্ত। প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্টলে হরেক রকমের পিঠা পুরি সাজিয়ে রাখেন। হৃদয়হরণ, চিতই, দুধপুরি, ভাজাকুলি,মালপোয়া, মিষ্টিকুমড়া পিঠা,চিকেন মোমো,সূর্যমুখী পিঠা,ছিড়ারুটি,তেজপাতা পিঠা, গোলাপ পিঠা,জামাই পিঠা, দুধ পুন্দিয়া, পাকান পিঠা, রস পিঠাসহ বাহারি নামের এই সব পিঠা খেতে ভীড় করে শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। স্টল ও পিঠা ভেদে দাম মোটামুটি ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে। পিঠা উৎসবে আসা একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, অনেক দিন পর ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজনের কারণে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরণের মেল বন্ধন তৈরি হচ্ছে।

ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, পিঠা উৎসবে তাদের বিভাগ থেকে পিঠা পরিবেশন করা হচ্ছে। সীমিত লাভে তারা নিজেদের তৈরি পিঠা বিক্রি করছেন। এটা শুধু পিঠা বিক্রির জন্য উৎসব নয়। বরং তারা বিভাগের সিনিয়র জুনিয়র ও কলেজের শিক্ষকদের সাথে সুন্দর ও অনন্দঘন একটি সময় পার করছে।

পিঠা উৎসবে আসা তাহসিনা স্নিগ্ধা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, পিঠা বাসায়ও খাওয়া হয়। কলেজে পিঠা উৎসব নতুন। এখানে এসে অনেক ধরণের অনেক নামের পিঠা দেখতে পেলাম। বন্ধুরা মিলে কিছু কিছু পিঠা কিনে খেয়েছি। আসলে স্বাদের চেয়ে আনন্দটাই বড়। অনেক দিন পর সবার সাথে দেখা হচ্ছে। গল্প হচ্ছে, অড্ডা হচ্ছে। অনেক সুন্দর একটা সময় কাটলো। আমরা খুশি আর কলেজ প্রশাসনকে ধন্যবাদ এমন আয়োজনের জন্য।
বোনের সাথে আসা পিঠা উৎসবে আসা ফাহিমা খাতুন(৭) নামে এক খুদে শিক্ষার্থী বলেন, আপুর সাথে পিঠা উৎসবে এসেছি। এখানে অনেক পিঠা সাজানো। মনে হচ্ছে পিঠার মেলা বসেছে। জামাই পিঠা আর হৃদয় হরণ খেয়েছি।

এদিকে পিঠা উৎসব উলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন উড়িয়ে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। পিঠা উৎসব উপ কমিটির আহবায়ক মহসীন হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর আখতার হোসেন।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসবের আয়োজন করতে পেরে আমরা খুশি। প্রতিবছর এমন আয়োজনের চেষ্টা থাকবে।

(এসএমএ/এএস/জানুয়ারি ২১, ২০২৫)