স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরে কৃষি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে জেলার কানাইতলায় এম আর এগ্রো ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফার্ম মেশিনারি এন্ড পোষ্টহারভেষ্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজনে এই মতবিনিময় সভা করা হয়।

মতবিনিময় সভায় অধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুত ও ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক ও কৃষকরা তাদের মতামত ব্যাক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এফএমপিই বিভাগ গাজীপুরের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. নুরুল আমিন, প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং এর প্রাক্তন পরিচালক ড. মো. আইয়ুব হোসেন, যশোর আরএআরএস এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাৗছার উদ্দিন আহম্মেদ,গাজীপুর বারির এফএমপিই বিভাগের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ এরশাদুল হক,লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন আর রশিদ প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় আব্দুলপুর এলাকার আবুল বাশার নামে এক কৃষক বলেন, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চাষাবাদ করে তারা লাভবান হচ্ছেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ত্রæটির কারণে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক সময় যন্ত্রাংশের মালামাল সহজে পাওয়া যায় না। এছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তারা সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করতে পারছেন। এ বিঘা জমিতে ভূট্টা আবাদ করতে ২২শ টাকা খরচ হলে, মেশিনের মাধ্যমে সেই একই কাজ করলে খরচ হয় ৫ থেকে ৬ শ টাকা । এক্ষেত্রে বিঘা প্রতি প্রায় ১৪শ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।

যশোর লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন আর রশিদ বলেন, কৃষকদের কষ্ট লাঘব করতে তারা কৃষি গবেষণার সাথে সমন্বয় করে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন। তবে, শ্রমিক সংকট ও চলমান মন্দার কারণে তাদের ব্যবসায় লাভবান হতে পারছেন না। কৃষি বিভাগ থেকে অর্থ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ সহায়তা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

গাজীপুর বারির এফএমপিই বিভাগের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ এরশাদুল হক বলেন, সারা বাংলাদেশের ১০ টি জেলার ২০ টি উপজেলায় কৃষিযন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ধাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। আগামি জুন মাসের দিকে এই প্রকল্প শেষ হবে। আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহি করছি। এছাড়া সহজে মান সম্পন্ন কৃষিযন্ত্রপাতি তৈরির বিষয়ে প্রস্তুতকারকদের দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষক লাভবান হবেন এবং মান্ধা আমলের চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর চাষাবাদের সাথে পরিচিত হবেন।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এফএমপিই বিভাগ গাজীপুরের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. নুরুল আমিন বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে যশোরের দুটি উপজেলায় বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে চাষাবাদ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা , অধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রস্তুতকারক ও সাধারণ কৃষকদের মাঝে সেতু বন্ধন তৈরি হয়েছে। যার ফলে সহজে যন্ত্রপাতি সঠিক ভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। আগামির উন্নত ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন বাংলাদেশ গড়তে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

(এসএমএ/এএস/জানুয়ারি ২০, ২০২৫)