ঝিনাইদহ থেকে মাছের আঁশ যাচ্ছে চীন-জাপানে
শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : কখনো বড় বঁটিতে বসে মাছ কাটছেন,আবার কখনো মাছের কাঁচা আঁশ বিভিন্ন দোকান থেকে সংগ্রহ করছেন। সংগৃহীত মাছের কাঁচা আঁশ বস্তায় ভরে হাট চাঁদনীর ছাদে নিয়ে তা রোদে শুকাচ্ছেন। এরপর তা বস্তায় ভরে ওজন করে যশোর থেকে আসা মাছের আঁশ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রিও করেছেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর বাজারের হাট চাঁদনীর নিচে মাছ বাজারে ঢুকলেই দেখা মিলবে এ চিত্রের। আর এই কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এক মাছ ব্যবসায়ী।
আবর্জনা ভেবে মানুষের ফেলে দেয়া মাছের এই আঁশ বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তিনি। আশরাফুল ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফারাসপুর গ্রামের শাখের আলী বিশ্বাসের ছেলে। প্রতিদিন বাজার থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাছের কাঁচা আঁশ সংগ্রহ করে শুকিয়ে তা বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করেছেন তিনি। এভাবে আয় করে চেষ্টা করেছেন স্বাবলম্বী হওয়ার।
স্থানীয়রা জানায়,আশরাফুল ইসলাম ২০ বছর ধরে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত। পাশাপাশি ১০ টাকা কেজি মূল্যে মাছ কাটা এবং মাছের কাঁচা আঁশ সংগ্রহ করেন। দৈনন্দিন জীবনে মানুষের ফেলে দেয়া এই আবর্জনাই রোজগারের অংশ হয়েছে আশরাফুলের। প্রতিদিন বাজার থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাছের কাঁচা আঁশ সংগ্রহ করে থাকেন তিনি। এরপর তা রোদে শুকিয়ে শুকনো আঁশ হিসেবে বাজারে বিক্রি করেন। আগে ফেলনা ভেবে মাছের আঁশ ফেলে দিলেও এর ব্যবহার বা বিক্রি হবার কথা জানার পর থেকে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে পরে ব্যবসায়ীদের কাছে আঁশের সাইজ অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন আশরাফুল। এসব আঁশ যাচ্ছে চীন, জাপান সহ উন্নত সব দেশে। আর তা দিয়ে মুরগীর খাদ্য,ঔষধ শিল্পসহ নানা প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ ব্যবসা নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় পিপুল হোসেন বলেন,‘আশরাফুল ইসলাম সারাদিন মাছ কেটে ১ হাজার টাকা মত আয় করে। পাশাপাশি বিভিন্ন দোকান থেকে মাছের আঁশ সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে বিক্রি করে। তাতে মাস শেষে বাড়তি কিছু টাকা রোজগার হয় তার।’
মাহমুদুল হাসান নামে আরেকজন বলেন,‘এই কাজ ধীরে ধীরে নতুন কর্মসংস্থান হতে পারে। তাই সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।’
আঁশ ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন,‘প্রতিদিনের কাজের পাশাপাশি এই আঁশ সংগ্রহ করে রোদে শুকায়। তাতে মাস শেষে ৭০ থেকে ৮০ কেজি হয়। পরে ব্যবসায়ীদের খবর দিলে যশোর থেকে এসে নিয়ে যান তারা। এই আঁশ চীন জাপান সহ উন্নত সব দেশে পাঠান ব্যবসায়ীর্।া এটা কওে বাড়তি কিছু আয় হচ্ছে,যা দিয়ে সংসারের নানা কাজে ব্যবহার করতে পারছি। সরকারীভাবে এই আঁশ বিক্রির সুযোগ পেলে আরো ভাল হতো। কারণ এর সঠিক দাম কত সেটা আমরা জানতে পারি না। ব্যবসায়ীরা যা দেয় তাই নিতে হয়। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই ব্যবসা আরো বড় করবো।’
(এসআই/এএস/জানুয়ারি ২০, ২০২৫)