রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের কানাইপুরে আলোচিত ওবায়দুর খান (২৮) হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় (১১ নং) আসামি ও কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন ওরফে আলতাফ মাতুব্বর (৫৪)সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০। এ সময় আলতাফ চেয়ারম্যানের সাথে থাকা জাহিদ শেখ (৪২) নামে এজাহার নামীয় (১০ নং) আরেক আসামিকেও গ্রেফতার করেন তারা।

বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপরোক্ত আসামিদের রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে করেন র‍্যাব সদস্যরা। এই দুজন নিয়ে ওই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে ফরিদপুরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

র‍্যাব-১০ (সিপিসি-৩) ফরিদপুর ক্যাম্পের স্কট কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) মো. আলী আরশাদ আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, 'হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের একটি বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সকালে তাঁদের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে'।

র‍্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত ওবায়দুর হত্যা মামলায় দুই আসামি শাহ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন ও জাহিদ শেখকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদ উজ্জামান।

এর আগে ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান (২৮) নামের যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে পিটিয়ে, চোখ উপড়ে, পা ভেঙে ও পায়ের রগ কেটে হত্যার ঘটনা ঘটে গত ১০ জানুয়ারি। ওই ঘটনায় নিহতের মা রেখা বেগম বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ১২ জানুয়ারি ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় রুজু হওয়া ওই মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়। ওইদিনই রেজাউল খান (৩৮) নামের এজাহারভুক্ত এক আসামিকে (৪ নং) গ্রেফতার করে পুলিশ।

ওই মামলায় এজাহার নামীয় ১৫ জন আসামির হলেন- ১. মো. খায়রুজ্জামান খাজা (৩৮), পিতা মৃত হানিফ মাতুব্বর, গ্রাম ভাটি কানাইপুর ২. মো. রাসেল মাতুব্বর (৩০), পিতা আলমগীর মাতুব্বর, গ্রাম মহারাজপুর ৩ মো. নাজমুল হোসেন (৪০), পিতা আক্তার শেখ, গ্রাম কাশিমাবাদ ৪.মো. রেজাউল খান (৩৮) পিতা বকবুল হোসেন খান ওরফে বইদ্যা ওরফে বইজা খান, গ্রাম ভেলাবাজ ৫. মো. রাশেদ তালুকদার (২৯), পিতা ইমানদ্দীন তালুকদার গ্রাম রায়কাইল ৬. নিজাম মাতুব্বর (৩২) পিতা আ. কাদের মাতুব্বর, গ্রাম খাস কান্দি ৭. ঝিন্টু মাতুব্বর (৪২), পিতা মৃত হানিফ মাতুব্বর, গ্রাম ভাটি কানাইপুর ৮. নাজমুল হোসেন (৩০), পিতা আলমগীর হোসেন, গ্রাম মহারাজপুর ৯. শাহ জাহান মৃধা (৩২) [১ নং আসামী খাজার ড্রাইভার], পিতা আবুল মৃধা, গ্রাম লক্ষীপুর ১০. জাহিদ শেখ (৪২), পিতা মৃত সোনামুদ্দিন শেখ, গ্রাম লক্ষীপুর ১১. শাহ মো. আলতাফ হুসাইন ওরফে আলতাফ মাতুব্বর (৫৪), পিতা মৃত- হানিফ মাতুব্বর, গ্রাম ভাটি কানাইপুর ১২. দাউদ খান(৪০), পিতা রহমান খান, গ্রাম করিমপুর ১৩. চয়ন মাতুব্বর (২৮), পিতা ইউনুস মাতুব্বর, গ্রাম ভাটি কানাইপুর ১৪. আমিন খান(৩৬), পিতা হায়দার খান, গ্রাম মৃগী এবং ১৫. এবাদত মোল্লা (২২) পিতা মো. সত্তার মোল্লা গ্রাম মহারাজপুর উভয় থানা কোতয়ালি, জেলা ফরিদপুর সহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে ওই মামলায়।

কানাইপুরে খাজা বাহিনীর ১০-১৫ জন সন্ত্রাসীর অমানবিক নির্যাতনে হত্যার শিকার ওবায়দুর খান (২৮) কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। তাঁর পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

(আরআর/এসপি/জানুয়ারি ১৬, ২০২৫)