বাগেরহাটে দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীকে বিনামূল্যে রক্ত প্রদান, খুশি রোগী ও স্বজনরা
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটে দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ ও বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে।
আজ বুধবার দিনব্যাপি বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গ্লোবাল ইয়ুথ হারমোনি ইনিশিয়েটিভ ও ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের আয়োজনে এই রক্তদান ও সংগ্রহ কর্মসূচি চলে। এতে জেলার ৪১টি রক্তদাতা সংগঠনের সদস্যরা অংশ গ্রহন করেন। এ ধরণের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। কোন হয়রানি ও টাকা ছাড়া রক্ত পেয়ে খুশি থ্যালাসেমিয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা। পরে রক্ত নিতে আসা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করা হয়।
থ্যালাসেমিয়া রোগী ৯ বছল বয়সী সীমার মা লাবনি বেগম বলেন, আমার দুটি বাচ্চা থ্যালাসেমিয়া রোগী। রক্ত দিতে দিতে একটি মারা গেছে। এখন একজন আছে, তাকে প্রতিমাসে রক্ত দেয়া লাগে। প্রতিমাসে রক্তের ব্যবস্থা করা আসলে খুবই কষ্টকর। এরা স্বেচ্ছায় রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, আমরা খুবেই আনন্দিত।
আরেক মা নাসিমা বেগম বলেন, একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর মাবাবাই জানেন যে রক্ত জোগার করা কত কষ্টের। গ্লোবাল ইয়ুথ হারমোনি ইনিশিয়েটিভ ও ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের এই আয়োজনে আমাদের খুবই উপকার হয়েছে। শরণখোলা থেকে রক্ত দিতে আসা সাব্বির হোসেন বলেন, সকালে উঠে ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে এখানে এসেছি। নিয়মিত রক্ত দিয়ে থাকি। তবে এটা একটু ব্যতিক্রম, থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্ত দিতে পেরে খুবই খুশি।
রক্তদাতা সংগঠন আলোর পথের সাধারণ সম্পাদক আবুবকর সিদ্দিক বলেন, বাগেরহাটের ৪১টি রক্তদাতা সংগঠনের ২ শতাধিক রক্তদাতা এখানে এসেছেন। বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে একটি দল আমাদের সহযোগিতা করছে। আজকে দুইশতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীকে আমরা রক্তদান করেছি। অবশিষ্ট যে রক্ত রয়েছে, সেগুলো বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে থাকবে, সেখান থেকে রোগীরা রক্ত গ্রহন করতে পারবেন।
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রোগ থ্যালাসেমিয়া। এই রোগে আক্রান্তরা সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। সুস্থ্য থাকতে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের দুই সপ্তাহ থেকে চার সপ্তাহের মাঝে রক্ত দেয়া লাগে। রোগী ও রোগীর স্বজনদের রক্ত জোগারের ভোগান্তি কমাতে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
(এস/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২৫)