মো: আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : শতশত বছর ধরে চলে আসা শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলাকে বলা হয়ে থাকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মেলা। এ বছর গত রোববার থেকে মেলা শুরু হয় মেলা। সনাতন ধর্মালম্বীদের পৌষ সংক্রান্তিকে ঘিরে এই মেলা হলেও সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে বহুকাল আগে থেকেই।   

আজ মঙ্গলবার লাখো মানুষের পদচারণা মূখর বৃহত্তম এই মাছের মেলাটি সম্পন্ন হয়। এতে হাওর-নদীর মিঠা পানি থেকে সংগ্রহ করা বিশাল বিশাল মাছ সহ হাওরাঞ্চলের বিলুপ্ত প্রজাতির অনেক দেশীয় মাছও স্থান পায়। মেলায় তিনদিনে অন্তত কয়েক লাখ দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল বলে ধারণা। সব মিলিয়ে তিনদিনের এই মেলায় অন্তত ২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে বলে জানান মেলার ইজারাদার কর্নেল আহমদ।

স্থানীয় মৎস্য বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর মেলার এই সময়টার জান্য সেরা মাছটি নিয়ে সারা বছর মুখিয়ে থাকেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শতশত সৌখিন ও পেশাদার ব্যাপারিরা। মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি নজর থাকে কুশিয়ারা নদীর বিশাল আকৃতির বাঘাইর ও বোয়াল সহ হাওর-নদীর বড় মাছের প্রতি।

মেলার ইজারাদার মো. কর্নেল আহমদ এর সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন দিন ব্যাপি এই মেলায় মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকার। বাঘাইড়, চিতল, বোয়াল, ঘাঘট, রুই, কাতলা প্রভৃতি মাছের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি ছিল। তিনি বলেন, সরকার কর্তৃক মেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা বরাদ্ধ না থাকায় আমরা জায়গা নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলাম।

এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরের ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের হামরকোনা এলাকার কৃষি জমির উপর শুরু হয় ঐতিহাসিক এই মাছের মেলা। যদিও সামাজিক মাধ্যমে আগাম প্রচারণার কারণে একদিন আগেই অর্থাৎ রোববার থেকেই মেলা জমতে শুরু করে।

এদিকে এবারের মেলায় সবচেয়ে দৃষ্টি কেড়েছে ২ মন ওজনের বিশালাকৃতির বাঘাইর মাছ। এই মাছটি দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে সেখানে। মাছ বিক্রেতা রফিক আলীর কাছে জানতে চাওয়া হয় মাছটির ওজন ও দাম সম্পর্কে। তিনি জানান, মাছটির ওজন অন্তত ২মণ হবে। দাম জানান সাড়ে ৩ লাখ টাকা। তবে দাম সাড়ে ৩ লাখ টাকা চাইলেও শেষ পর্যন্ত কুশিয়ারা নদী থেকে জেলের জালে ধরা পড়া বিশাল এই মাছটি কতটাকা দামে বিক্রি হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২৫)