কাজ না করে টাকা উত্তোলন
গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে সেতুর অ্যাপ্রোচ নির্মাণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেলা পরিষদের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৩ জানুয়ারী) ঢাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আনিচুর রহমান (বর্তমান বাগেরহাটের কচুয়ায় কর্মরত) ও মেসার্স হাবীব অ্যান্ড কোং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান।
মামলার নথি পাঠানো হয় বিশেষ জেলা জজ আদালতে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের মাইজকান্দি থেকে আড়ুয়াকান্দী গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এইচবিবি সড়ক ও খালের ওপর তিনটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ হাতে নেয় গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদ। প্রতিটি ব্রিজে ১২ মিটার করে সংযোগ সড়ক থাকার কথা থাকলেও ব্রিজ ৩টির সংযোগ সড়ক না করে প্রকল্প থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন প্রকল্পের প্রকৌশলী ও ঠিকাদার। ব্রিজে সংযোগ সড়ক না থাকায় ৯ বছর ধরে জনগণ সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছিলেন।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমলে নিয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান করে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়। পরে এ বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জেলা পরিষদে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অভিযোগের সত্যতাও মেলে। সোমবার জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আনিচুর রহমান ও ঠিকাদার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে আমরা সরেজমিন ব্রিজগুলোতে গিয়েছিলাম। তারপর প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর জেলা পরিষদে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করি। কমিশনের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছন । মামলার নথিপত্র জেলা বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুদক জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জেল পরিষদের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান বলেন, বিলে স্বাক্ষর করার নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে মাঠ পর্যায়ে কাজ দেখে।সেসময় রিপোর্ট দেয় উপ সহকারী প্রকৌশলী শরীফ মনির হোসেন, তার রিপোর্ট দেখে আমি স্বাক্ষর করি। এর পর হিসাব বিভাগে যায়। হিসাব বিভাগ থেকে যায় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হামিদুল হকের কাছে। এখন আমাকে কেন এই মামলায় আসামি কারা হলো? যে মাঠের রিপোর্ট দিলো সেই মনির সাহেব কেন নয়? চূড়ান্ত ভাবে যে বিলে অনুমোদন দিলো সেই প্রধান নির্বাহী কেন আসামি হলো না?
এ বিষয়ে জানতে সাবেক উপ সহকারী প্রকৌশলী শরীফ মনির হোসেন এবিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হন নি।
(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২৫)