কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ফসলী জমি ও উঁচু ভিটা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে খনন করছে পুকুর ও দিঘী, খননের মাটি বিক্রি করছে ইট ভাটায় ও ভরাট কাজে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের নাগদী গ্রামের আব্দুর রব এর ছেলে বকুল ও একই গ্রামের আলী মৌলভীর ছেলে রেজাউল সুগন্ধী গ্রামে দুই একর কৃষি জমি দিঘী বানাতে এস্কভেটর দিয়ে খনন করে ৯ টি ট্রাকে মাটি বহন করে ভরাট কাজে ও ইট ভাটায় বিক্রি করছে। এতে করে ফসলী জমি যেমন কমে যাচ্ছে, তেমন কৃষি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছে। গ্রামীণ সড়ক দিয়ে মাটি বহনে পরিবেশও হুমকিতে পড়ছে। বকুল ও রেজাউল চাচাতো ভাই, দাদার সম্পত্তিতে দিঘী খনন করছে। তাদের দিঘী খনন পাশে ৫ -৬ ঘর বসতী রয়েছে। দিঘী খননে তাদের বাড়ি ঘর হুমকির মুখে পড়বে। তবে ওই দিঘী খননের মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা ভয়ে মুখ খুলছে না।

তার পরেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, "ভাই আমরা গরিব মানুষ' দিন আনি দিন খাই। এ জন্য কাউকে কিছু বলতে চাইনা। তবে এ জমিতে দিঘি খনন করলে পাশের জমি ও বসবাসের ঘর গুলো হুমকির মুখে পড়বে। দিন রাত ট্রাক দিয়ে মাটি বহন শব্দে ও ধূলাবালুর কারণে আশপাশের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।"

এ জমির মাটি প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।

রেজাউল বলেন, আগে মেহগনি বাগান ছিল। সেটা উঠিয়ে দিয়ে পুকুর খনন করছি। ওই জমি আমার ও বকুলদের। মাটি যাচ্ছে সাবেক বিএনপি এমপির ইট ভাটায়। কিভাবে তাকে মাটি দিচ্ছে সেটা ভালো জানে বকুল। তার কাছ থেকে জেনে নিন।

বকুল মুঠোফোনে জানান, পাশে আমাদের পুকুর আছে সেটা আরো বড় করতে খনন করছি। ভাটার মালিকের সাথে দরদাম ঠিক হয়নি। অগ্রিম কিছু টাকা দিয়েছে। মাটি নেয়ার পর বাকি টাকা দিবে। সকল দপ্তর থেকে এমনকি ইউএনও অফিস থেকেও মাটি কাটার অনুমোদন এনেছি। আমার জমি আমি যা মন চায় তাই করবো। তাতে প্রশাসনের কি? ওই খানে মোট ২ একর জমি রয়েছে।

ভাটার মালিক খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে তার ন্যাশনাল ব্রিকসের ম্যানেজার আবুল বাশারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, "আমরা বকুল ও রেজাউলের কাছ থেকে মাটি ফিট হিসাবে ক্রয় করেছি। বেকু দিয়ে কেটে ট্রাকে করে ব্যবহার উপযোগী মাটি ভাটায় আনছি। সেই সাথে কিছু ভরাট কাজেও যাচ্ছে। ভাই পরে কথা বলবো একটু কাজে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "কোন প্রকার জমিতে খনন করা বা মাটি বিক্রি করা যাবে না। আপনি ঠিকানা দেন আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”

(কেএফ/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০২৫)