ভাঙ্গায় টিকটকার তরুণীকে গণধর্ষণ ও নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগে গ্রেফতার ৬
রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় টিকটক বানানোর কথা বলে ডেকে এনে ২০ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণের পর নগ্ন ভিডিও ধারণ ও জিম্মি করে রাখার অভিযোগের ভিত্তিতে, ওই ঘটনায় জড়িত ৬ যুবককে আটক করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার চুমুরদি ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে ভাঙ্গা থানা পুলিশের একটি বিশেষ আভিধানিক দল। এ সময় আটক হওয়া যুবকদের মোবাইলে ধারণ করা নগ্ন ভিডিও ফুটেজও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসব খবর নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান।
ভাঙ্গা থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলা থেকে ভুক্তভোগি টিকটকার ওই তরুণীকে (২০) নতুন টিকটক ভিডিও তৈরি করার কথা বলে আকরাম হোসেন নামের এক টিকটকার ভাঙ্গা উপজেলায় ডেকে আনেন। ওই তরুণী ভাঙ্গায় আসলে উপজেলার ঘারুয়া গ্রামে একটি বাড়িতে আটকে রেখে প্রথম দফায় তাকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন। এবং পরবর্তীতে ওই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তরুণীকে ব্লাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করতে থাকে আকরাম ও তার কয়েকজন সহযোগী। এরপর সেখান থেকে ওই তরুণীকে আকরাম ও তার দুই সহযোগী ৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) উপজেলার বাবলাতলা বাজার সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী পরিচয়ে ওঠে।
বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে সন্দেহ হলে চুমুরদি ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আনারুদ্দিন মোল্লার ছেলে ছাইদুল মোল্লা ও তার ৫/৭ জন সহযোগী মিলে আকরামসহ ওই তরুণীকে বসতঘরে আটকে রাখে। এসময় প্রায় ঘন্টাব্যাপী তরুণী ও আকরামকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারপিট করে ও তাদের মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।
এরপর এক পর্যায়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল শুরু করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে ইউপি সদস্যের ছেলে ও তার সহযোগীরা। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু টাকাও দেয় টিকটকার আকরাম। টাকা পেয়ে সহযোগীদের নিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করে মেম্বারপুত্র ছাইদুল।
উপরোক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই মামলা ও গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোকছেদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী ওই তরুণীর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত ৬ যুবককে আটক করতে সক্ষম হয় ভাঙ্গা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানিক দল। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি। এতে ধর্ষণের দুইটি মামলা ও পর্ণগ্রাফি আইনে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামীদের রবিবার (৫ জানুয়ারি) আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন ওসি মোকছেদুর।
(আরআর/এএস/জানুয়ারি ০৪, ২০২৫)