রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : তিনটি বিদেশি পিস্তলসহ আসাদুল গাজী নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গত শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কুলপুকুর মোড় এলাকা হতে তাকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে। আটক আসাদুল গাজী (৩২) দেবহাটা উপজেলার কালাবাড়িয়া গ্রামের মৃত জাফর গাজীর ছেলে।

এ ঘটনায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে শনিবার দুপুর দুটোর দিকে এ প্রেস ব্রিফিং করেছেন।

এদিকে খলিষাখালি ভূমিহীন আশ্রয়ন প্রকল্পের কোষাধ্যক্ষ গ্রেপ্তারকৃত আসাদুল ইসলাম আজ শনিবার বিকেলে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দেবহাটার খলিষাখালি বিলের ১৩১৮ বিঘা জমি লাওয়ারিশ সম্পত্তি হেসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধানর বিচারপতি রায় দেওয়ার পর প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রতিপক্ষ নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, তার ব্যবায়িক পার্টনার পূর্ব নলতার মাছ আনারুল, পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে ওই জমি জবরদখল করে আসছিল। গত পহেলা নভেম্বর ভূমিহীন নেতা কামরুলকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ওই চক্রটি পিটিয়ে হত্যা করে। ২ মাস ছয়দিনেও ২৩ জন আসামির মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কামরুল হত্যার বিচারের দাবিতে তিনি লড়াই করে আসছিলেন। এজন্য পরিকল্পিতভাবে গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স রিপনকে ব্যবহার করে আটশত বিঘা গ্রামের প্রসাদ মাখালের ছেলে গৌতম মাখালের ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল নিয়ে বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুলপুকুর গ্রামের ভগ্নিপতি হাসানের বাড়িতে যাওয়ার সময় তাকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাকে স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে নির্যাতনের অভিযোগ করেন তিনি।

মামলার বাদি গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আহম্মেদ কবীরের দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুলপুকুর এলাকায় অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দু’জন ব্যক্তির মধ্যে নোড়ার চক গ্রামের ইসাদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম পালিয়ে যায়। অপরজন আসাদুলকে আটক করে পুলিশ। পরে তার পরিহিত জ্যাকেট থেকে ২টি ও প্যান্টের পকেট থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আহম্মেদ কবীর বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে আসাদুল ইসলামসহ পলাতক আসামী আনারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে ১৯৭৮ সালে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তভার উপপরিদর্শকব মোস্তাক আহম্মেদ এর উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোস্তাক আহ ম্মেদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামী আসাদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার আদালতে পাঁচ দিনের রিমা- আবেদন জানানো হয়েছে। রিমা- শুনানীর দিন এখনো ঠিক হয়নি।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, আসামী আসাদুল ইসলাম ও তার বোন কুলপুকুর গ্রামের জামিলা খাতুন জানান, বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আসাদুলকে কুলপুকুর মোড় থেকে পরিকল্পিতভাবে সোর্স রিপনের মাধ্যমে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও গ্রেপ্তারের ৪২ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ০৪, ২০২৫)