পদ্মার চর থেকে বালু লুটের ‘মহোৎসব’
বিশেষ প্রতিনিধি : দিনের বেলায় সুনসান নিরাবতা। তবে সূর্য ডোবার সাথে সাথেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। চলে মাটি ও বালু লুটের মহোৎস। বিভিন্ন জায়গা থেকে ড্রাম ট্রাক,ট্রলি এনে রাখা হয় এসব এলাকায়। অন্ধকার হলেই শুরু হয় বালু উত্তোলন। বালু ও মাটি ভর্তি ট্রাকগুলো নির্ধারিত জায়গায় বালু ও মাটি পৌঁছে দেয়। এসব কাজে প্রশাসনের অনুমোদন নেই। তবুও পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে চলছে মাটি ও বালু লুট। রাতের বেলায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে এসব কারবার। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের সাহাপাড়া ঘাট,চরপাড়া ও শাহামীরপুর এলাকায় পদ্মা নদীর চর থেকে অবাধে চলছে এসব মাটি ও বালু লুট। চক্রটির মূলহোতা হাবাসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান লতিফ খাঁ ও তার সমর্থকরা।
জানা গেছে, প্রশাসনের অনুমোদন না থাকলেও ওপর মহলকে ম্যানেজ করে পদ্মার চর থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন চলছে। বালি উত্তোলন কারীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা ও স্থানীয় কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাটি ও বালুবাহী ট্রাক চলাচল করার জন্য চরের মধ্যে লোহার পাত বসিয়ে রাস্তা করা হয়েছে। অবাধে বালু উত্তোলন করায় ধুলোবালিতে ওই এলাকার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এভাবে বালু উত্তোলন করা হলে বর্ষাকালে পদ্মা নদীর ভাঙনে শত শত বিঘা ফসলি জমিও হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কায় স্থানীয়রা।
সূত্র জানায়, হাবাসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান লতিফ খাঁ ছাড়াও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত আছে চরপাড়া এলাকার মুকুল প্রামানিক, কুতুব বিশ্বাস, নজরুল মোল্লা, বাচ্চু মোল্লা, সালাম শেখ, কালাম শেখ, সলেমান, উকিল মৌরি, কাচারীপাড়ার মন্নু, চরআফরার ধলাই, চরঝিকড়ীর শরিফুল সহ আরো কয়েকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে চলে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কাটার কাজ। দিনের বেলা ওই ভেকু আড়াল করে রাখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রাতের বেলায় শত শত গাড়ী আসে বালি নিয়ে যায়, আমরা গাড়ীর শব্দে ঘুমাতে পারি না। মাঝে মধ্যে পুলিশও আসে তবে বালি কাটা চক্রের কিছু হয় না। তারা সব ম্যানেজ করেই করে মনে হয়। বিগত দিনেও বালি কাটা হতো এখনও কাটা হয় পার্থক্য কোথায় খুজে পাচ্ছি না।
স্থানীয়রা বলেন, প্রশাসনের নিরবতায় নির্ভয়ে রাতে বালু চুরি করে বিক্রি করে কতিপয় বিএনপি নামধারী নেতারা লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। প্রায় ১ মাস ধরে নিয়মিতভাবে বালি মাটি কেটে বিক্রি করা হলেও প্রশাসনের নেই কোন হস্তক্ষেপ।
এ বিষয়ে পাংশা উপেজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু দারদা বলেন, গত সপ্তাহেও অবৈধ বালু চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব কাজে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
(একে/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০২৫)