রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায়
৪০৭ শতাংশ জমিতে অবৈধ স্থাপনা ৬৪৮
শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে পাল্লা দিয়ে চলছে সড়কের দুু’ধারের জায়গা দখল। নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট, দোকান-পাট, বাড়ি-ঘর। ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনাও রয়েছে শতশত। দখলের দৌঁড়ে থেমে নেই সরকারী আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরাও। ঝিনাইদহ জেলার সড়ক-মহাসড়কের দু’ধারে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ স্থাপনা। এদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তবে তারা বলেছেন, দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোদ ঝিনাইদহ শহরের আরাপাপুরে সড়কের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে পৌরসভা। এই মার্কেটের দোকানপাটগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে। একইভাবে ক্যাডেট কলেজ এলাকায় সড়কের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে হোটেল-রেঁস্তোরা, গ্যারেজসহ বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট। শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডেও সড়কের জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। মহেশপুরের খালিশপুরে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট। একইভাবে জেলার ৬টি উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ৬৪৮টি অবৈধ স্থাপনা।
তথ্যমতে, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ১.৬০ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ২১০। ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের ০.৪২ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ৪৮, ঝিনাইদহ শহর পুরাতন সড়কের ০.৩৫ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ৪৮, ঝিনাইদহ টার্মিনাল-আরাপপুর-হামদহ সড়কের ০.৩০ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ২২, কালীগঞ্জ-কোটচাঁদপুর-জীবননগর সড়কের ০.৮০ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ১৬০, খালিশপুর-মহেশপুর-দত্তনগর সড়কের ০.৮০ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ১৬০টি। এসব জায়গা দখল করার কারণে সংকুচিত হচ্ছে সড়কের জায়গা। যে কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি সাধারণ মানুষের। দখলের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন দখলদাররা।
তারা বলছেন, দোকানপাট বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন তারা,সরকার বললেই ছেড়ে দেবেন। কোনো দখলদার বলছেন, আরাপপুরে সড়কের জায়গা দখল করে পৌরসভা মার্কেট নির্মাণ করেছে। তাতে কারো মাথা ব্যথা নেই, আমরা করলে সমস্যা কি?
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সড়কের পাশে এভাবে মার্কেট বা দোকানপাট নির্মাণ করায় রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে,ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ছোট গাড়িগুলো বড় গাড়িকে সাইড দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়কের পাশের এসব অবৈধ স্থাপনাগুলো দখলমুক্ত করে রাস্তা প্রশস্ত করলে দুর্ঘটনা কম ঘটতো এবং মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারতো।
অন্যদিকে সড়কের পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমান বলেন, সকড়ের অবৈধ স্থাপনাগুলো নিয়ে আপাতত তালিকা করার কাজ করছি। অর্থাৎ কোন কোন স্পটে কতগুলো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে এবং কত একর জমি দখল করা হয়েছে। তালিকা করা শেষ হলে এসব অবৈধ দখলকৃত জায়গাগুলো উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার সড়কের পাশের ৪০৭ শতাংশ জমিতে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে ৬’শ ৪৮ টি। এর সংখ্যার আরও বেশি বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
(এসআই/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০২৫)