হাড় কাঁপানো শীতে কম্বল পেয়ে মোমেনা খাতুনদের মুখে রাজ্যের হাসি
শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : মোমেনা খাতুন। স্বামী শামছুদ্দিন বিশ্বাস মারা গেছেন ২০ বছর হলো। এরপর থেকে ত্রিভূবনে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে ছাড়া কেউ নেই। নিজের বিধবা ভাতা ও ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার সামান্য কিছু টাকায় চলে তার সংসার। তার ওপর শীতে বেশ কষ্টে দিন যাপন করছিলেন তিনি। অভাবের কারণে লেপ বা কম্বল কেনাও সম্ভব হচ্ছিল না। তবে সেই কষ্ট কিছুটা লাগব হয়েছে মোমেনা খাতুনের। তার মুখে ফুটেছে অকৃত্রিম হাসি। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে একটি কম্বল পেয়েছেন তিনি।
শুধু মোমেনা খাতুনই নয়, তার মত প্রায় ৫’শ অসহায় ও শীতার্ত নারী-পুরুষ পেয়েছেন একটি করে কম্বল। ঝিনাইদহের ‘মানবিক মিশন ফাউন্ডেশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এমন শীতে অসহায় দুস্থদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলার হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত হিসেবে কম্বল বিতরণ করে তারা। তীব্র শীতে শীতবস্ত্র পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন দুস্থ ও শীতার্তরা।
কম্বল পেয়ে তারা বলছেন,এই শীতে একটি কম্বল কত প্রয়োজন তা একমাত্র শীতে কষ্ট পাওয়া গরিব মানুষ-ই ভালো জানে।
কম্বল পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আন্না খাতুন নামে এক নারী বলেন বলেন,‘এবার শীত পড়তেই কম্বল পেলেন। তাঁদের মতো অসহায় মানুষের কম্বল পেয়ে ভালো হলো। শীতে খুব আর কষ্ট হবে না।’
লাঠিতে ভর করে কম্বল নিতে আসা মোমেনা খাতুন বলেন,‘আল্লাহ ভালো করুক। টাকার অভাবে কম্বল বা লেপ কিনতে পারছিলাম না। খুব কষ্টে ছিলাম। কম্বলটা পেয়ে এ বয়সে শীতটা ভালো যাবে।’
শুধু শীতবস্ত্র বিতরণই নয়,দুস্থদের পাশে যেকোন প্রয়োজনে সর্বদা দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে ‘মানবিক মিশন ফাউন্ডেশন’র সভাপতি রাশেদ আহমেদ বলেন, দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানুষের জন্য কাজ করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য এই দেশ বা আমাদের এলাকার কেউ কষ্টে থাকবে না। এলাকার যেকোন অসহায় মানুষ সহযোগিতা পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে।’
প্রসঙ্গত,‘মানবিক মিশন ফাউন্ডেশন’ ২০১৭ সাল থেকে অসহায় দুস্থদের নানারকম সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষকে খাদ্য, অর্থ, চিকিৎসাসেবা সহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ৩৫ জন। তারা সবাই হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০০৬ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
(এসআই/এএস/ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪)