এখনো সরকারি হয়নি কাপাসিয়ার প্রচীনতম কলেজটি
সঞ্জীব কুমার দাস, গাজীপুর : গাজীপুর জেলার প্রথম কলেজ ও কাপাসিয়া উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজ। মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ মাঠ ও ৩টি পুকুর রয়েছে কলেজ ক্যাম্পাসে। চারদিকে রয়েছে সবুজের সমারোহ। গাছ গাছালি আর পাখির কলকাকলিতে সব সময় কলেজকে করে রেখেছে প্রাকৃতিক অপরুপ রুপে।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেও উপজেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত কলেজটি অদৃশ্য কারণে সরকারি করন করা হয়নি। বিগত সময়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপি ওসরকারের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিরা জেলার প্রাচীনতম এ কলেজটি সরকারিকরণের আশ্বাস দিলেও তা আদৌও আশার বাণী হিসেবে আশা বানী হিসাবে রয়েছে কাপাসিয়ার মানুষের মনে।
সরকারি দপ্তরে একাধিকবার চিঠি চালাচালি হলেও এ ব্যাপারে কোন সুরাহা হয়নি। সরকারি করণের জন্য একাধিকবার তথ্য চাওয়া হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিলে তা গ্রহণ করার পরও কাপাসিয়া কলেজটি সরকারি করা হয়নি। কলেজ সরকারিকরণ কর্তৃপক্ষ খসড়া তালিকা প্রকাশ করলে তাতে দেখা যায় কাপাসিয়া কলেজের নাম ১২৪ নাম্বারে রয়েছে। কিন্তু যখন সরকারি কলেজের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় তাতে দেখা যায় কাপাসিয়া কলেজটির নাম নেই। উপজেলায় অন্য একটি কলেজ সরকারী করা হলেও কাপাসিয়া কলেজটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই কলেজটি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আসছে। সরকারের দেয়া ১৫.০৯ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা হলেও বর্তমানে কলেজের জমি রয়েছে ১৯ একর। কলেজটির কিছু জমি হয় যাচ্ছে বেদখল। সীমানা প্রাচীর না থাকায় মাঠটি এলাকাবাসীর গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য কলেজ কতৃপক্ষ আবেদন জানিয়েও কোন সুরাহা করতে পারেননি। কলেজটিতে বর্তমানে চারটি বিষয়ে অনার্স কোর্স সহ স্নাতক পর্যন্ত ২৫০০ জনের মত শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির বলেন , বর্তমানে শ্রেণিকক্ষের সমস্যার কারণে শ্রেণী কার্যক্রম চালাতে সমস্যা হচ্ছে। আইসিটি ভবনের সমস্যা অনেক দিনের, নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি।
আইসিটি ভবনটির উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করার জোর দাবী কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। কলেজটিতে আগে ছাত্রাবাস থাকলেও নানা সমস্যার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কলেজের ছাত্রাবাসের বিশেষ প্রযয়োজন। কলেজ সরকারি করন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি থাকবে অতি দ্রুত যেন কাপাসিয়া কলেজটি সরকারি করণ করা হয়। সীমানা প্রাচীর না থাকায় কলেজের জায়গাজমি চতুর্দিকে বেদখলে চলে যাচ্ছে বিধায় অতি দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মান করে কলেজের জায়গাজমি রক্ষার জোর দাবি ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের। বিশেষ করে তৎকালীন জমিদার রমনাথ কর্মকারের বাড়িতে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা। যে কোন সময় প্রশাসনিক ভবন ধসে ঘটতে পারে বড় রকমের অঘটন। কলেজের প্রশাসনিক ভবন অর্থাৎ জমিদার বাড়ির সংস্কার কাজের মাধ্যমে পূরনো এ ঐতিহ্যের স্মৃতি জমিদার বাড়ি সরকারি ভাবে সংরক্ষণ চায় কাপাসিয়ার সাধারণ মানুষ।
(এসকেডি/এএস/ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪)