বড়লেখা সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে চা শ্রমিক হত্যা, প্রতিবাদে বাম জোটের বিক্ষোভ
মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : সম্প্রতি মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে সমনবাগ চা বাগানের চা শ্রমিক গোপাল বাগতি হত্যার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দূপুর ১২ টার দিকে শহরের চৌমুহনা চত্বরে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মৌলভীবাজার জেলা শাখা এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
বাসদ জেলা কমিটির সমন্বয়ক এডভোকেট মঈনুর রহমান মগনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য এডভোকেট আবুল হাসানের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিলিমেষ ঘোষ বলু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জহর লাল দত্ত, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনতোষ দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশীদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা কি আইনের লঙ্ঘন নয়? সীমান্তে আর কত প্রাণ ঝরবে, বিএসএফ এর সকল হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে একটা মবের কালচার তৈরি হয়েছে,চোরের অপবাদ দিয়ে মানুষ মারাটা একটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাটে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে চুন, ব্যাটারির এসিড পানিতে মিশিয়ে এক যুবক ও শিশুকে পান করিয়ে যুবককে হত্যা করা হয়েছে এবং শিশুটিও মৃত্যুপথযাত্রী। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা দরকার। একই সাথে বড়দিনের অনুষ্ঠানের দিন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বাড়ি পুড়িয়ে ফেলারও সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তারা বলেন, নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী রাজাকার,আলবদর,আলশামস ছিলো তারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারে না। যার ফলে গত কয়েকদিন আগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একজন বীরপ্রতীক খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে তাঁকে এলাকা ছাড়া করেছে। কোনও ব্যক্তির ওপর যদি কোন অভিযোগ থাকে তা নিশ্চয়ই আইনের শাসনের মধ্যে নিশ্চিত হতে হবে। আমরা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই লাঞ্ছিতকারীদের মধ্য থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধার ওপর এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
(একে/এএস/ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪)