সালথায় হালি পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু
আবু নাসের হুসাইন, সালথা : পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথায় পুরোদমে হালি পেঁয়াজের চারা রোপন শুরু হয়েছে। উপজেলার মোট ফসলী জমির ৯০ শতাংশ জমিতে এবছর পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। এখানকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল এটি। উপজেলায় এখন চলছে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের মৌসুম। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলি জমিতে দলবেঁধে পেয়াঁজের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবছর উপজেলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে।
সালথা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় মোট ১১ হাজার ১শত ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই উপলক্ষে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৪শত ৫০ জন কৃষককে পেঁয়াজ বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এ উপজেলায় লাল তীর কিং, তাহেরপুরী, ফরিদপুরী, বারি-১সহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ রোপণ করা হচ্ছে।
তবে এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করছেন। ছোট-বড় সবাই মিলে হালি পেঁয়াজের চারা উত্তোলন ও রোপন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা। হালি পেঁয়াজের চারা রোপনের জন্য কৃষক সংকট থাকায়ও থেমে নেই চাষিরা।
উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি সিরাজ মোল্যা, খারদিয়া ইউনিয়নের ছেকেন শেখ আটঘর ইউনিয়নের বকুল মাতুব্বার ও গট্টি ইউনিয়নের দবির মোল্যা বলেন, এ বছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন। উপজেলার প্রতিটি গ্রামের মাঠেই পেঁয়াজ চারা রোপণের ধুম পড়ে গেছে। প্রতিদিন ভোর থেকে পেঁয়াজের চারা উত্তোলনের পর জমিতে রোপণ করা হয়। জনপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা করে কাজ করা হচ্ছে। তবে একযোগে কাজ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই পেঁয়াজ রোপণ সম্পন্ন হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুদর্শন শিকদার বলেন, এ বছর সালথা উপজেলায় ১১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা যাতে সঠিকভাবে অর্জিত হয় সেজন্য সরকার কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এবছর উপজেলার ১ হাজার ৪'শত ৫০ জন কৃষককে বিনা মূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হযেছে। পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
(এএনএইচ/এএস/ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪)