বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের কিংবদন্তিতুল্য নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল মারা গেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র খবরে এমনটাই জানা গেছে। মুম্বাইয়ের ওয়াকহার্ট হাসপাতালে আজ (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে  তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। শ্যামের মেয়ে পিয়া বেনেগাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, শ্যাম বেনেগাল কিডনির সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছিলেন। সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করার জন্য তাকে হাসপাতালে যেতে হত। একাধিক শারীরিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তিনি যেভাবে নিজের জীবনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তা প্রশংসাযোগ্য।

শ্যাম বেনেগাল ভারতীয় সিনেমা আন্দোলনের পথ প্রদর্শক ছিলেন। বাস্তবসম্মত গল্প সিনোর পর্দায় তুলে ধরে তিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছেন। গত ১৪ ডিসেম্বরে ৯০ বছর বয়সে পা দেন ভারতীয় এ নির্মাতা। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতকে তিনি উপহার দিয়েছেন একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমা। তার নির্মিত ‘মন্থন’, ‘অঙ্কুর’, ‘ভূমিকা’, ‘জুনুন’, ‘মান্ডি’, ‘নিশান্ত’ ভারতীয় সিনেমার মাইলফলক হয়ে আছে।

শুধু তাই নয়, ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুবেদা’ সিনেমাটি বক্স অফিসের সঙ্গে সঙ্গে সমালোচকদের মনজয় করেছিল। এ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন কারিনা কাপুর, মনোজ বাজপেয়ী এবং রেখা। ১৯৭৬ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন শ্য়াম বেনেগাল। ১৯৯১ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ প্রদান করা হয়।

নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল ৯০ বছর বয়সে পা দিলেও তিনি নিজের কাজ নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকতেন। গত বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘মুজিব: দ্যা মেকিং অব নেশন’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক খ্যাতিমান তারকা অভিনয় করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে দেখা অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নুসরাত ফারিয়া।

নব্বইতম জন্মদিনে সিনেমার প্রতি তার অধ্য়াবসায় নিয়ে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই বৃদ্ধ হই। এটা মহৎ কিছু নয়। জন্মদিন একটা বিশেষ দিন হতে পারে কিন্তু আমি এটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করি না। প্রতিবছরের মতো এই বছরেও আমি আমার অফিসে কেক কেটেছি সবার সঙ্গে।’

১৯৩৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর ভারতের হায়দারাবাদে শ্যাম বেনেগাল জন্মগ্রহণ করেন। কোঙ্কনি পরিবারে জন্ম তার। মাত্র ২১ বছর বয়সে বাবার দেওয়া ক্যামেরার মাধ্যমে প্রথম ছবি তৈরি করেছিলেন তিনি। তার বাবা ছিলেন পেশায় চিত্রগ্রাহক। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন শ্যাম। হায়দারাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেছিলেন এ নির্মাতা। তার হায়দারাবাদ ফিল্ম সোসাইটি থেকেই সিনেমা নির্মাণের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তার মৃত্যুতে ভারতের শোবিজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪)