তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা দিদার হত্যা মামলায় গোপালগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেল সিকদার ও সেনাবাহিনীর গাড়ি পোড়ানো মামলায় বঙ্গবন্ধু কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহনেওয়াজ খানকে গ্রেফতার করে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (ওসি) মির মোঃ সাজেদুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (ওসি) আরো বলেন, গতকাল রবিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামী সোহেল সিকদার হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালনা করে । সেখান থেকে গোপালগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সোহেল সিকদারকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ঘোষেরচর গ্রামের বাড়ি থেকে রোববার রাতে গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শাহনেওয়াজ খানকে গ্রেপ্তার করে ওই বাহিনী।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস.এম জিলানী স্ত্রী, সন্তান ও দলীয় নেতা–কর্মীদের গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তার গাড়ি বহর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা গাড়িবহরে হামলা চালায়। এসময় ১০ টি গাড়ি ভাংচুর ও অন্তত ৫০ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়া গাড়ি বহরে থাকা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শওকত আলী দিদারকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ মহাসড়কের পাশে ফেলে রাখা হয়।

এ ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিহত শওকত আলী দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম (সেলিম), সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজমা আক্তারসহ ১১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার জনকে আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদে গত ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জের গোপীনাথপুরে সশস্ত্র বিক্ষোভ করে কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। বিক্ষোভ চলাকালে হামলা চালিয়ে সেনা সদস্যদের মারপিট, সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ১০৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৩২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গত ২২ আগস্ট গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন গোপালগঞ্জ অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার লে. কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪)