হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পার্সেন্টিসের টাকা না দিলে বিল পাশ করা হয়না

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পার্সেন্টিসের ৫% টাকা না দিলে কোন বিল পাশ করা হয়না বলে অভিযোগ তুলেছেন কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: হুমায়ূন দিলদার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কেন্দুয়া উপজেলায় কৃষি ও কৃষকের উন্নতির লক্ষ্যে পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে বেশ কিছু প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। এই সব প্রদর্শনীতে বিনা মূলে সার, বীজসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হবে। এসব উপকরণ ক্রয়ের জন্য কৃষি মন্ত্রনালয় ও কৃষি অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রকল্প থেকে কয়েক লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলনের জন্য বিল আকারে তৈরী করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের বিল সংশ্লিষ্টদের পার্সেন্টিসের টাকা না দেওয়ায় তারা বিল দিতে গড়িমসি করছেন। এভাবে চলে যায় কয়েক সপ্তাহ।
কৃষি কর্মকর্তা মো: হুমায়ূন দিলদার জানান, কৃষি প্রদর্শনীর বরাদ্দ থেকে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পার্সেন্টিসের টাকা দিলে কৃষকরা বঞ্চিত হবেন। আমি জেনে শুনে সেই কৃষকদের কেন ঠকাতে যাবো? নিয়ম ছাড়া পার্সেন্টিসের টাকাই দেবো কেন? বিষয়টি তিনি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষসহ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছেন। তাছাড়া দুদক কতৃপক্ষকেও মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দুদক কার্যালয় থেকে জনৈক কর্মকর্তা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন। এরপর হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে অর্ধেক বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
অর্ধেক বিলের টাকা কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার মুখস্ত নেই, শাখা থেকে জেনে নেবেন। পরে শাখা থেকে গলা টেনে বলা হয় দেড় লাখ টাকার মত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি কিছু বিলের জন্য আইটি খাতে ৭% টাকা দাবি করছেন তারা।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আমি তাদেরকে ৭% টাকা আদায়ের নীতিমালা দেখাতে বলেছি। যদি নীতিমালা দেখাতে পারেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে আমি ৭% টাকা দিয়ে দেব। দুদক ও উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট জানানোর পর হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা এখন নড়েচড়ে বসেছেন। যে বিল দেওয়া হয়েছে তা থেকে তেমন কোন পার্সেন্টিসের কোন টাকা নেওয়া হয়নি বলে জানান। তিনি বলেন, এখন বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে না আনলেও চলে।
আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হকের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিল পাসের জন্য কোন পার্সেন্টিস চাইওনা নেইওনা। কৃষি কর্মকর্তার জমা দেওয়া বিলে অনেক অসংগতি ও অনিয়ম ছিল। আমরা অডিটের মাধ্যমে যাচাই বাচাই করে অনিয়মগুলি বাদ দিয়ে বিল পরিশোধ করেছি। এখানে কোন পার্সেন্টিস নিয়েছি তা কৃষি কর্তকর্তা বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, নিজের অনিয়ম ঢাকতে গিয়ে অন্যের উপর দোষ চাপানো মোটেও ঠিক না।
(এসবি/এসপি/ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪)