শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : নিয়োগ নেই বেশিরভাগ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। যেখানে আছে সেখানেও যান না চিকিৎসকরা। কাগজে-কলমে বছরের পর পর পদায়ন থাকলেও চেনেন না ওই এলাকার মানুষ। এভাবেই চলছে ঝিনাইদহের ১৩ টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারণে সেবা পাচ্ছে না প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো। গ্রাম থেকে সেবা নিতে ছুটতে হচ্ছে উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে।

জানা যায়, চিকিৎসকসহ জনবল পদায়ন না হওয়ায় দেড়যুগের বেশি সময় আগে বন্ধ হয়ে গেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। খুলে পড়ছে ইট ও পলেস্তারা। চুরি হয়ে গেছে জানালা-দরজা। পরিণত হয়েছে জঙ্গল আর গোয়ালে। অথচ সরকারি খাতাই এখনও চালু এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি।

একইভাবে শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই মেডিকেল অফিসার। দেখা মেলেনি সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারেরও। একজন অফিস সহায়ক দিচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা। দিনের পর দিন এভাবেই চলছে ঝিনাইদহের ১৩ টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। কোথাও আবার মেডিকেল অফিসার পদায়ন থাকলেও সেখানে যান না কোন চিকিৎসক। যে কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজার মানুষ। সেবা নিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের ছুটতে উপজেলা বা জেলা সদরে। দ্রুত এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক পদায়ন ও পদায়নকৃত চিকিৎসককে কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।


আবাইপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন,‘এই এলাকা থেকে জেলা শহর প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। এখানে ভাল কোন ডাক্তার থাকলে চিকিৎসা সেবা নিতে বাইরে যাওয়া লাগে না। জেলা শহরে গেলে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। অনেকে টাকার অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

মান্দারবাড়িয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এলাকার ইয়াসিন আলী বলেন,‘আগে এখান থেকে ওষুধ পাওয়া যেত,ডাক্তারও থাকতো। কিন্তু এখন ডাক্তারও থাকে না,ওষুধ পাওয়া যায় না। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘরগুলোতে মানুষ ছাগল-গরু রাখে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

একই এলাকার রহমত আলী বলেন,‘বর্তমানে বিল্ডিংগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেলে। এগুলো মেরামত বা নতুন করে নির্মাণ করলে এই এলাকার লোকজন খুবই উপকৃত হবে।’

বিষয়টি স্বীকার করে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন হাদী জিয়া উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট থাকার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দেওয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। চিকিৎসক নিয়োগ হলেই সমস্যার সমাধান হবে।’

স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, জেলার ৫ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত এসব উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন সেবা নিতে আসে প্রায় ১৫’শ মানুষ।

(এসই/এএস/ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪)