গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে প্রাক্ বড়দিনের খাবার খেয়ে সোমবার রাতে ১৬৩ শিশু কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরমধ্যে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  ভর্তি হয় ১৪৮ শিশু-কিশোর। বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নেয় ১৫ জন। অসুস্থ ১৬৩ জনের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

মঙ্গলবার সকালে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মাসুদ রানা কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন। তিনি এসময় চিকিৎসক, নার্স, রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি কান্দি ইউনিয়নের 'চার্চ অফ বাংলাদেশ' এর চার্চে খাবার সরবরাহকারী ধারাবাশাইল বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী গোবিন্দ বোসের হোটেল পরিদর্শন করেন।

এ সময় কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা.কুমার মৃদুল দাস ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা.এস এম সাকিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন ডা. মো: মাসুদ রানা বলেন, হোটেল পরিদর্শন করে জানাগেছে পরিবেশিত বিরিয়ানীর ডিম ও মাংস আগের দিন ফ্রাই হয়।

এছাড়া বিরিয়ানীর প্যাকেট সোমবার ভোরে প্যাকেটিং করা হয়।এসব কারণে খাবারে সমস্যা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্চে। খাবারের স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।এছাড়া কোটালীপাড়ার হোটেল গুলোতে বাসি ও ফ্রিজিং করা খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এখাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এটি বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি হোটেল মালিকদের এ ব্যাপরে সচেতন করতে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছি।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চার্চ অব বাংলাদেশ নামক একটি চার্চের প্রাক-বড়দিন অনুষ্ঠানের খাবার খেয়ে প্রায় ২শ’ শিশু-কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ শিশু-কিশোরদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ধারাবাসইল গ্রামের সাথী রায় (৩০) বলেন, কান্দির চার্চ অব বাংলাদেশ নামক চার্চে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রাক্-বড়দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে আমার ৪ মেয়ে অংশ নেয়। তাদের দুপুরে বিরিয়ানী প্যাকেট দেওয়া হয়।এই বিরিয়ানীর প্যাকেট নিয়ে তারা বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়িতে আসে। বিরিয়ানী য়াওয়ার পর সন্ধ্যার দিকে তাদের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। অসুস্থ ৪ মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।তারা এখান থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়েছে। এখন তারা ভাল আছে।

কান্দি ইউনিয়নের ওই চার্চের প্রজেক্ট ম্যানেজার রিপন কুন্দা বলেন, আমাদের সংস্থার তালিকাভূক্ত ৩শ’ ২০ জন শিশু-কিশোরকে নিয়ে আমরা প্রাক-বড়দিনের অনুষ্ঠান করি । তাদেরকে স্থানীয় ধারাবাশাইল বাজারের গোবিন্দ বোস হোটেল থেকে বিরিয়ানীর প্যাকেট কিনে সরবরাহ করি। এই বিরিয়ানী খেয়ে শিশু-কিশোররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা অসুস্থদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আমাদের সংস্থার অর্থায়নে চিকিৎসা দিয়েছি । সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যীশুখ্রিস্ট সবাইকে রক্ষা করেছেন।এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কুমার মৃদুল দাস বলেন, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে হাসপাতালে বমি ও পাতলা পায়খানা জনিত সম্যসা নিয়ে শিশু-কিশোররা আসতে শুরু করে । রাত ১০ টা পর্যন্ত ১৬৩ জন রোগী এখানে আসেন । এরমধ্যে ১৪৮ শিশু-কিশোরকে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় । বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নেয় ১৫ জন । অসুস্থ ১৬৩ জনের মধ্যে ১৫৪ সুস্থ হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি ফিরে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ৯ শিশু-কিশোর। দুপুরে ৯ জনকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ্ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা ধারণা করছি খাদ্যে বিষক্রিয়ায় শিশু-কিশোররা অসুস্থ হয়েছে। সিলি সার্জন হাসাপাতাল ও হোটেল পরিদর্শন করেছেন।

(এমএস/এএস/ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪)