গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বিএনপির উপজেলা কমিটিতে অস্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে  সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

যার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ, তিনি হচ্ছেন কাশিয়ানী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলী মিয়া। তিনি উপজেলার বেথুড়ী ইউনিয়নের ফকি মিয়ার ছেলে। এছাড়াও  ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্যও ছিলেন তিনি ।

জানা গেছে, দীর্ঘ ১৫ বছর পর গোলাম মোস্তফা মোল্যাকে সভাপতি ও শেখ সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে কাশিয়ানী উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৫ মে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মো. গোলাম মোস্তফাকে সভাপতি ও শেখ মো. সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি ঘোষণা করেন । গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কমিটির ঘোষণা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) সেলিমুজ্জামান সেলিম। বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটিতে সদস্য করায় উপজেলাজুড়ে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বঞ্চিত নেতা কর্মীরা।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, বিতর্কিত লোককে কমিটিতে ঢুকিয়ে পুরো দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। বিতর্কিত লোককে দলে ঠাঁই দেওয়া যাবে না। বিতর্কিত ব্যক্তিকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানান তারা। তারা আরও বলেন, ইয়াকুব আলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার মিয়ার সহচর ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন এই নেতার রাজনীতি করেছেন ।

এ বিষয় অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে র‌্যাব মিথ্যা মামলা দিয়েছিল । আমি মামলাটি হাইকোর্ট থেকে স্থগিত করেছি । এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার মিয়াকে উপজেলা নির্বাচনে সমর্থন করেছিলাম। তার সাথে আমি রাজনীতি করিনি।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. সেলিম বলেন, তার বিরুদ্ধে কোন মামলা রয়েছে কি না জানিনা। যদি এমন অভিযোগ আসে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, তাকে সদস্য পদ দেওয়ার মামলার বিষয়টি জানা ছিল না। আমি বিষয় টি জানলাম খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কাশিয়ানী উপজেলার রাহুথড় এলাকায় অস্ত্র কেনাবেচার সময় র‌্যাব-৮ এর মাদারীপুর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন হিমাদ্রী শেখর রায়ের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্রেতা সেজে অভিযান চালিয়ে ইয়াকুব আলী মিয়া ও তার এক সহযোগীকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র (শর্টগান) ও গুলির খোসাসহ গ্রেফতার করে। পরে কাশিয়ানী থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়। যে মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।

(এমএস/এএস/ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪)