জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে গণমানুষের ঢল
স্টাফ রিপোর্টার : গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের ৫২ বছর বরণ করলো বাঙালি জাতি। শীত উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষের গন্তব্য ছিল শহীদ বেদি। হাতে বাহারি ফুল, মুখে দেশ প্রেমের শ্লোগান ছিল প্রতিটি শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের কণ্ঠে। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত শহীদ বেদী।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। শহীদ বেদী ভরে ওঠে ফুলে ফুলে। লাল-সবুজের পতাকায় ছেয়ে যায় সৌধ প্রাঙ্গণ। মানুষের হাতে হাতে ফুল আর পরনে ছিল লাল সবুজের ছোঁয়া।
এসময় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেস ক্লাব, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং সব বয়সী মানুষকে স্মৃতিসৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়।
এছাড়া একে একে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, গণফোরাম, জাসদ, বাম দলসহ নানা রাজনৈতিক দলগুলো বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শীতের ভোরে ভিড় উপেক্ষা করে জাতির বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ। ভোরের রক্তিম সূর্যোদয়ের সঙ্গে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় বাড়তে থাকে হাজার হাজার মানুষ। এসেছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারাও। স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে স্মৃতিসৌধকে ঘিরে গোটা সাভার যেন পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে।
শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন সাভারের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল রশিদ। তিনি বলেন, আজ স্মৃতিসৌধে গণমানুষের ঢল নেমেছে। সবাই একে একে নিবেদন করছেন শ্রদ্ধা। আমি আমার সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহযোদ্ধারা এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জীবন দিয়েছেন। তারা দেখে যেতে পারেননি স্বাধীনতা। আজ তারা সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধায় সিক্ত। এটাও আমার কাছে বড় পাওয়া।
স্থানীয় পোশাক শ্রমিক ময়নাল হোসেন বলেন, আমরা দিনভর কারখানায় কাজের চাপে থাকি। বছরে দুই বার আমরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বীর শহীদদের স্মরণ করার সুযোগ পাই। আজ তাই পুরো পরিবার নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। এখানে আসলেই গর্বে বুকটা ভরে যায়।
গাজীপুর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা যুদ্ধ করতে পারিনি। কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছেন, দিয়েছেন দেশের জন্য প্রাণ তাদের কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা প্রয়োজন। তাই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। এখানে আমি প্রতিবারই আসি।
এদিকে দিনটি উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরাসহ সাদা পোশাকেও পুলিশের নজরদারি রাখা হয়েছে।
(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪)