কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে হুমকিতে পড়ছে ফসলী জমি। সরকার পতনের পর থেকে বালু খেকোরা ফসলী জমি থেকে বালু উত্তোলন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসন নিশ্চুপ রয়েছে। এভাবে অপরিকল্পিত ভাবে ভূগর্ভ থেকে বালু উত্তোলন করলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে। সেই সাথে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হলে দেশে খাদ্য সংকট হবে।

উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের কোমরাইল গ্রামে মো. আহাদ মোল্যা ও তার ভাই বকুলের ফসলী জমি সংলগ্ন ডোবা থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রায় ৫ মাস যাবত। তিনটি ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে লাগাতার বালু উত্তোলন করে গ্রামের ছোট বড় পুকুর খাদ ভরাট করছে ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, কোমরাইল গ্রামের আহাদ ও তার ভাই বকুলের জমিতে সাতৈর ইউনিয়নের বেড়াদী গ্রামের আলমগীর মোল্যা বিএনপির প্রভাবখাটিয়ে ম্যানেজ করে ৩ মাস যাবত ফসলী জমির পাশের ডোবা থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। তিনি হুইল মেশিন লাগিয়ে গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে পরিবেশ ও ফসলী জমি হুমকিতে পড়ছে।

তার পাশে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের তামারহাজী গ্রামের মো. জুনায়েদ মিনা, একই মালিকের জমিতে ৫ মাস যাবত অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। প্রায় ২০ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করেছেন তিনি। যে কোন সময় ফসলী জমি ভেঙে ক্ষতি গ্রস্থ হতে পারে। এর আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে জুনায়েদ মিনার মেশিন ও বালু তোলার পাইপ ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। তার পরেও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পারছে না প্রশাসন। তার ভাষ্য মতে তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন ও কিছু সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করেন। তামার হাজী গ্রামের আরেক ড্রেজার মালিক মো. ইসানুর শেখ একই মালিকের জমিতে প্রায় দুইমাস যাবত অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে।

অপর দিকে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের তামারহজী গ্রামে ফসলী জমির পাশ থেকে ২টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে ৫ মাস যাবত বালু উত্তোলন করছে। সাতৈর ইউনিয়নের পাইকহাটি গ্রামের ড্রেজার মালিক মো. জাকারিয়া শেখ। তিনি প্রায় ৫০ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থান ভরাট করেছেন। বালু তোলার কারণে পাশের ফসলী জমি ভেঙে যেতে পারে। এর আগে ওই স্থান থেকেই কাজের মাঝামাঝি সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. গোলাম রাব্বানী সোহেল অভিযান চালিয়ে কিছু পাইপ ভেঙে দিয়ে মেশিন বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. গোলাম রব্বানী সোহেল বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ করা যাবেনা। এর আগে তেলজুড়ী মাঠ থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার মালিক জাকারিয়ার বালু তোলার পাইপ ভেঙে দেয়া হয়েছিল। আবার চালালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(কেএইচএফ/এএস/ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪)