শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরসহ উত্তরে জেঁকে বসেছে শীত। লাফিয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার দাপট বেড়েছে। দু'দিন ধরে শীতের তীব্রতার পাশাপাশি  ঘন কুয়াশায় মেঘাচ্ছন্ন পড়েছে চারপাশ। 

আজ শনিবার দিনাজপুরে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৩ শাতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় এক কিলোমিটার নির্ণয় করা হয়েছে।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষকণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে আজ রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। আর শুক্রবার লাফিয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। আজ শনিবার তা আবার কমে দাঁড়িয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। এ চলতি ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয়ার্ধে তাপমাত্রা আরো কমবে। এ মাসের শেষে জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাবে একটি শৈত্য প্রবাহ। আগামিমাসে অর্থাৎ নতুন বছরের জানুয়ারিতে একাধিক শৈত্য প্রবাহ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

শীতে কাবু হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া দিন মজুর ও শ্রমজীবী মানুষ। দূর্দশা বেড়েছে হতদ্ররিদ্র-ছিন্নমূল মানুষের। গরম কাপড়ের অভাবে কেউ কেউ কষ্টে দিনাতিপাত করছে।

তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও সকালে উঠেছে সূর্য কিন্তু প্রখরতা একেবারেই কম। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা ঠিকভাবে কাজে যেতে পারছেন না কিংবা কাজে গেলেও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না, ফলে তাদের আয় উপার্জনে ভাটা পড়েছে।

দিনাজপুরে 'মানুষ বেচা কেনার হাট' খ্যাত শহরের ষিষ্টিতলায় শ্রমজীবী মানুষের বাজারে এ প্রতিবেদকের কথা হয় ষাটোর্ধ বৃদ্ধ মমিন হোসনের সঙ্গে। তিনি জানান, এই শীতের খুব সকালে ৬ কিলোমিটার পদ অতিক্রম করে তিনি বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকা থেকে এসেছেন। কিন্তু, এখনো (সকাল ১১ টা) কাজ জুটেনি কপালে। জানিনা, আর আজ কাজ জুটবে কিনা! কাজ না পেলে কি খাবে? এ নিয়ে দুঃচিন্তার কথা ব্যক্ত করেন তিনি।

আটো বাইক চালক মোজ্জাফর হোসেন বলে দুপুর গড়িয়ে গেলেও জমার অর্ধেক টাকাও উঠেনি তার। শীতের কারণে লোকজনের আগমন কম। টাকা উপার্জন না করতে পেরে দু:চিন্তার ভাঁজ তার কপালে।

এদিকে শীতের দাপটের সাঙ্গে দিনাজপুরে ভেড়েছে গরম কাপড় বেচাকেনা। অভিজার বিপণী-বিতান, হকার্স মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানেও বিক্রি বেড়ে গরম কাপড়।

(এসএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৭, ২০২৪)