কুলিয়ারচরে দোকানপাটসহ ১১ ঘরে অগ্নিকাণ্ডে অর্ধ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই
-.jpg)
সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে অগ্নিকাণ্ডে মুদি, ডিলার, সেলুন, ভাঙ্গারী, ক্লাব ও ভাড়াটিয়া ঘরসহ ১১টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোর রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে পৌরশহরের চারারবন মহল্লা নামক স্থানে কুলিয়ারচর কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন ফাইজুল ইসলামের মার্কেটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোর রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে কুলিয়ারচর পৌরশহরের ফাইজুল ইসলামের মার্কেটে ফাহিমুল ইসলামের ডিলারশীপ গোডাউনে প্রথমে আগুন জ্বলতে থাকার বিষয়টি টের পায় পাশ্ববর্তী দোকানদার। এসময় তিনি চিৎকার ও ফোন করে লোকজন ডাকলে, লোকজন এসে তাকে সাটার ভেঙে উদ্ধার করে। পরে মুহুর্তের মধ্যেই একের পর এক দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দেয়। এসময় তারা দেখতে পায় ফাহিমুল ইসলামের গোডাউনের টিনের বেড়া কাটা। যা দেখে মনে হয়, কেউ বেড়া কেটে গোডাউনে ভিতর আগুন দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় রহস্য ও চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ফোন পেয়ে বিদ্যুৎ অফিস বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয় এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
মার্কেটের মালিক ফাইজুল ইসলাম জানান, এ মার্কেটে ১০টি দোকানঘর রয়েছে। এরমধ্যে ১টি নিজে মাহাদী স্টোর নামে মুদির ব্যবসা করেন আর বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া। তিনি বলেন, দোকানে থাকা ছেলে মাহাদি ফোন দিয়ে পাশের দোকানে আগুন লাগার ঘটনা জানালে ঘটনাস্থলে এসে দোকানের সাটার ভেঙে তাকে উদ্ধার করা হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে পুরো মার্কেটটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে তার নিজের মুদির দোকানের প্রায় ১০/১২ লাখ টাকার মালামাল, দোকানে থাকা নগদ ৪ লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও বাড়ির দলিলপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ফাহিমুল ইসলামের ডিলারশীপ দোকানের ফাহিম বলেন, সানলাইট ও ম্যাটাডর ডিলারশীপের ব্যবসা তার। তিনি আগুন লাগার খবর পেয়ে দোকানে এসে দোকানের টিন কাটা দেখতে পান এবং তার দোকানেই আগুনের সূত্রপাত। তিনি বলেন প্রতিবেশীর সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর জেরেই তাকে মেরে ফেলা এবং বড় ধরনের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেই আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। এতে তার প্রায় ২৪ লাখ টাকার মালামাল ও ব্যাটারি চালিত একটি ভ্যান গাড়ি পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুদি ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া জানান, আগুন লাগার ঘটনায় তার দোকানের প্রায় ৪ লাখ টাকার মুদি মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. মাসুদ মিয়া জানান, তার দোকানের রড, টিনসহ ভাঙারি প্রায় ৪০ হাজার টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শীতল সেলুনের মালিক শীতল চন্দ্র শীল জানান, বাড়ি থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। আগুনের ঘটনায় তার প্রায় ৬০ হাজার টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভাড়াটিয়া সাদ্দাম ও প্রবাল দাস জানান, তাদের তিনজন ব্যাচেলর ভাড়াটিয়ার প্রায় ১ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার ইলিয়াস ভূইয়া জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আগুনের সূত্রপাত জানা যাবে। আগুনের ঘটনায় আনুমানিক ত্রিশ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবিহা ফাতেমাতুজ্-জ্হোরা ও কুলিয়ারচর থানা পুলিশ।
(এসএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৭, ২০২৪)