উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগর্নি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে পাঠানো এক পত্রে বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তিদানের পরামর্শ দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন পাক-ভারত পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়ানোর জন্য ক্ষমতাঅনুযায়ী সবকিছু করার অনুরোধ জানিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিনের কাছে চিঠি পাঠান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী রাজস্থানের জয়পুরে এক জনসভায় বলেন, ভারত পূর্ববঙ্গের জনগণের মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রশ্নে পাকিস্তানের সাথে বিরোধের ব্যাপারে জাতিসংঙ্গ অথবা বৃহৎ শক্তিবর্গের চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না।

মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা আড়িখোলা ও পূবাইলের মধ্যবর্তী রেলসেতু বিস্ফোরক লাগিয়ে উড়িয়ে দিলে ঢাকা-নরসিংদী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ক্যাপ্টেন মুসলিম তাঁর বাহিনী নিয়ে ১২দিন ধরে পাকঘাঁটি তাহেরপুর অবরোধ করে রেখেছিলেন। দীর্ঘদিনের অবরোধে পাকসেনারা মনোবল একেবারে হারিয়ে ফেলে। এমতাবস্থায় ক্যাপ্টেন মুসলিম একটি কোম্পানী নিয়ে ভোর ৫টায় তাহেরপুর আক্রমণ করেন। সকাল ৬টার মধ্যে তাহেরপুর শত্রুমুক্ত হয়। পাকসেনারা চরম ক্ষতি স্বীকার করে এখান থেকে পালিয়ে যায়। এই যুদ্ধে ৩ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।

যৌথ বাহিনীর প্রবল আক্রমণের ফলে পাকবাহিনী হিলি থেকে জয়পুরহাটের দিকে অবস্থান নিলে যৌথ বাহিনী সেখানেও আক্রমণ পরিচালনা করে। এই যুদ্ধে জয়পুরহাট পুরোপুরি শত্রুমুক্ত হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনিীর চারটি ট্যাংক ধ্বংস হয়। ৪৫০ জন পাকসৈন্য এই যুদ্ধে প্রাণ হারায় । রাতে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ চালেয়ে গৌরিনগরের একটি এলাকা দখল করে নেয়। এই যুদ্ধে ১২ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।

নোয়াখালীতে মুক্তিবাহিনী তাঁদের অবস্থান সুদৃঢ় করে একযোগে ফেনীত পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়। শেষ খবর পাওয়া পযন্ত ফেনী এলাকার দখল নিয়ে তুমুল যুদ্ধ চলছিল।

দিনাজপুরে মুবিক্তবাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পঞ্চগড় থেকে দক্ষিণে পুতুলিয়া পযন্ত অগ্রসর হয়।

করাচীতে নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কোয়ালিশন পার্টির সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার স্বার্থে ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানানো হয়।

সম্মিলিত বাহিনী নাগেশ্বরী ও বেপারীহাট মুক্ত করে। বেপারীহাট যুদ্ধে সিপাহী এম. এফ. আলী আকবর এবং সিপাহী এম. এফ. আবুল হোসেন শহীদ হন। এর পরপরই ধরলা নদীর উত্তর তীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০২৪)