যুক্তরাষ্ট্রে এক টুকরো বাংলাদেশ
আবদুল হামিদ মাহবুব
আমি যুক্তরাষ্ট্রে (আমেরিকা) আসার পর ইতোমধ্যে ১৭ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। আছি আর মাত্র ৩-৪ দিন। আসার পর যে শহরে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছি সেটা ফিলাডেলফিয়া। আগেও একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, ফিলাডেলফিয়ার পাতালরেল (সাবওয়ে) ষ্টেশনে ঢোকার সিঁড়িগুলো নামতে গিয়ে মানুষের মলমুত্রের দুর্গন্ধ পেয়েছিলাম। আমার বউমা বললো, ‘হোমলেস মানুষেরা ষ্টেশনটাকে এমন নোংরা করে রাখে। দেখে যেনো পা ফেলে ফেলে চলি।’ একই অবস্থা পেলাম নিউইয়র্ক গিয়েও।
নিউইয়র্ক গিয়ে পাতালরেলে সিঁড়ি ভেঙ্গে নীচে নামতে গিয়ে বাড়তি দেখলাম সিঁড়ির রেলিং ধরে কালো মানুষ অনেকে মাথা নীচের দিকে ঝুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জানলাম এরা এমন ভাবে নেশা করেছে যে নড়াচড়া করার শক্তিও পাচ্ছে না। তাদেরে পাশ কাটিয়েই যাত্রীরা মাটির নীচের ষ্টেশনে পৌঁছাচ্ছেন।
আরেকটি বিষয় আমার কাছে কেমন কেমন লেগেছে। বাস, সাবওয়ে ও ট্রলি চড়ার সময় ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী অনেক মেয়ের সাথে ২ থেকে ৫ জন পর্যন্ত ছোট বাচ্চা দেখেছি। কিন্তু তাদের সাথে কোনো পুরুষ নেই। বাঙালি কমিউনিটির অনেকের সাথে কথা বলে জেনেছি এসব বাচ্চাদের বেশির ভাগেরই পিতার পরিচয় নেই। বিবাহ বর্হীভূত সম্পর্কে এদের জন্ম হয়েছে। সরকার এই বাচ্চাদের লালনপালনের জন্য মাকে মাসে মাসে ভালো অংকের ডলার দেয়।
এদেশে এসে পাতালরেল আমার কাছে আরেক বিস্ময়! আমার মনে হয়েছে ফিলাডেলফিয়া ও নিউইয়র্কে মাটির নীচে আরেকটি শহর। পাতালরেলে চড়েবসে শহরের যে কোনো স্থানে আসা যাওয়া করা যায়। মাটির নীচেই বিশাল জায়গা নিয়ে জংশনও রয়েছে। তবে পাতালের সাবওয়ে (রেল) ষ্টেশনগুলো মাটির উপরের ষ্টেশন থেকে তুলনামূলক অপরিস্কার।
বাসে নিউইয়র্ক সিটিতে ঢুকতে হয় হাডসন নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরী টানেল পার হয়ে। এই টানেল প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ। ছয় লেনের এই ট্যানেল নির্মিত হয়েছে ১৯৩৪ সালে। আব্রাহাম লিঙ্কনের নামে নামকরন করায় এই টানেলের নাম ‘লিংকন টানেল’। বর্তমানে হাডসন নদীর তলদেশ দিয়ে ৯ মাইল (প্রায় সাড়ে ১৪ কিলোমিটার) দীর্ঘ রেল টানেল নির্মিত হচ্ছে। এটি চালু হবে ২০৩৪ সালে।
একদিন আমি আর আমার ছেলে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার কাছে একটি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, দুইজন সাদা চামড়ার ভদ্রলোক কাছে এসে আমাদেরকে কি যেনো জিগ্যেস করলো। আমি তাদের কথা বুঝিনি। আমার ছেলে বললো, ‘উই আর নট খ্রিস্টান।’ সে কেনো একথা বললো জানতে চাইলাম? ছেলে আমার বলে, ‘এই লোকরা খ্রীস্টান তাবলিগী। জিগ্যেস করেছে আগামীকাল রোববার চার্চে (গীর্জা) যেতে আগ্রহী কি না? তাই তাদের বললাম আমরা খ্রিস্টান নই, যাবো না।’ বুঝতে পারি এখানেও খ্রীস্টান ধর্মের ধার্মীকরা আছে। তারা তাদের মানুষকে ধর্মের পথে রাখার জন্য আমাদের তাবলিক জামাতের মতো চার্চে যাবার দাওয়াত দেয়।’
আমি বইয়ের মানুষ। পাবলিক লাইব্রেরিতে বই পড়তে পারায় আমার জীবনের ভিত তৈরি হয়েছে। তাই যেখানে যাই সেখানেই লাইব্রেরির প্রতি আমার একটা আকর্ষণ থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে এসেও আমি লাইব্রেরির প্রতি টান অনুভব করি। আমার ছেলের ভার্সিটির বিশাল লাইব্রেরি দেখেছি। ওটা দেখেতো আমি মুগ্ধ। ছেলে আমাকে বলে, ‘এটার চেয়ে কয়েকগুণ বড় লাইব্রেরি এই শহরে আছে। আমি বলি, ‘সেই লাইব্রেরিতে আমাকে নিয়ে চলো।’ তখন বিকাল পাঁচটার উপরে বাজে। ছেলে বলে, ‘এখন সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। আগামীকাল যাবোনে।’
ফিলাডেলফিয়া শহরের ভাইনষ্ট্রিটে অবস্থিত সেই লাইব্রেরির। নাম ‘ফ্রি লাইব্রেরি’ আমাদের দেশের পাবলিক লাইব্রেরির মতো, অর্থাৎ সব পাঠক এই লাইব্রেরিতে অবাধে যেতে পারেন। পরদিন বউমা লাইব্রেরির ওয়েব সাইট সার্চ করে জানালো, ‘আব্বা, আজ লাইব্রেরিতে কাউকে ঢুকতে দেবে না। আমি জিগ্যেস করি, ‘কেনো?’ বউমা বলে, ‘বিল ক্লিনটন আগামী কোন একদিন ওই লাইব্রেরিতে আসবেন। তার প্রস্তুতির জন্য তারা সাধারণ পাঠকের প্রবেশ একদিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।’
এর পরদিন আমরা সেই লাইব্রেরিতে গেলাম। বিশাল আয়তন নিয়ে কয়েক তলা ভবনে লাইব্রেরি। ঢোকার মুখেই ভিতরে সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠাতার মূর্তি। মূর্তি স্থাপিত স্তম্ভে প্রতিষ্ঠাতার নাম, জন্ম ও মৃত্যুসন লেখা রয়েছে। লাইব্রেরিতে ডিজিটাল সিস্টেমে ক্যাটালগিং করা। সকল বিভাগ আলাদা আলাদা। প্রতিটি বিভাগে সারির সামনে চালু অবস্থায় একটা কম্পিউটার আছে। যে যেটা খোঁজবেন কম্পিউটারে লগইন করলেই কোন সারির ঠিক কত নাম্বারে সেটা আছে, নির্ভুল ভাবে সেই তথ্য পেয়ে যাবেন।
পৃথিবীর কত কত ভাষার বই পুস্তক এই লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে। অনেক পাঠককে দেখলাম চুপচাপ বসে বই পড়ছেন। কাউকে কাউকে দেখলাম পুরোনো বই ঘাটাঘাটি করে ফটোকপি করিয়ে নিচ্ছেন। সম্পূর্ণ ফ্রি’তে যার সেটা প্রযোজন ফটোকপি করিয়ে নিতে পারছেন। একাধিক জনকে দেখেছি মোবাইল ফোনে পৃষ্ঠাগুলোর ছবি উঠিয়ে নিতে। অনেক সংখ্যক কর্মী লাইব্রেরিতে কাজ করছেন। মেটেল ডিটেকটর মেশিনসহ সিকিউরিটি গার্ড আছেন। তবে লাইব্রেরি পরিচালনায় যাদের দেখলাম তারা প্রায় সবাই তরুণ ও মধ্য বয়সী। কিন্তু পাঠক যাদের দেখেছি তারা সবাই ছিলেন বয়স্ক। আমি অনুমান করি, কোনো পাঠকের বয়সই ষাটের নীচে হবে না। এক দু’জন পাঠককে দেখলাম চেয়ারে বসেই ঘুমোচ্ছেন।
আমি ছেলেকে বলি, ‘বাংলা ভাষার কেমন বই আছে, সেটা দেখতো।’ ছেলে লগইন করলো। আমার দিখে চেয়ে সে মুখ ফ্যাকাসে করে জানালো, ‘বাংলা ভাষার কোনো বই এই লাইব্রেরিতে নেই।’ কথা শুনে আমি আশ্চর্য হলাম! এবার বললাম, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে সার্চ দিতে’। সার্চ দিয়ে পাওয়া গেলো। ইংরেজীতে লেখা দুইখানা বই। দুটো বই-ই দুই ইংরেজ লেখক রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লিখেছেন। আমাদের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের ইংরেজিতে লেখা একাধিক বই পেয়েছি। আছে সত্যজিৎ রায়ের একাধিক মুভির ভিডিও (সিডি)।
লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে সামনেই ‘লোগান স্কয়ার’। সেখানে বিভিন্ন খুঁটিতে (পোল) পৃথিবীর অনেকগুলো দেশের পতাকা উড়ানো। জাতিগত বৈচিত্র বুঝানোর জন্য নাকি সে দেশের স্থানীয় প্রশাসন এটা করে রেখেছে। খোঁজতে খোঁজতে আমাদের বাংলাদেশের পতাকাও পেয়ে গেলাম। পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে মনে হলো যুক্তরাষ্ট্রে এক টুকরো বাংলাদেশ পেয়েগেছি। পতাকা যে খুঁটিতে উড়ছিলো সেটাতে সরু একটি প্লেটে বাংলায় লেখা ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’। পতাকার নীচে আমরা সবাই ছবি উঠালাম।
অসুস্থ আত্মীয়দের দেখতে দুই দফা নিউইয়র্ক গিয়েছি। ফিলাডেলফিয়া থেকে নিউইয়র্কের দূরত্ব দুই ঘন্টার। এখানে মাইল কিংবা কিলোমিটারে দূরত্ব না মেপে, সেটা মাপা হয় সময় দিয়ে। এখানে সময়ের মূল্য খুব বেশি। প্রথম বার নিউইয়র্ক নেমে বাতাসে কেমন একটা গন্ধ পেয়েছিলাম। তাড়াহুড়ো করে এখানে ওখানে ছুটোছুটি করতে গিয়ে সেই গন্ধ নিয়ে তেমন কোনো কথা বলিনি। ধরে নিয়েছিলাম নতুন পরিবেশে আমার নাকে ভিতরেই হয়ত কোনো সমস্যা হয়েছে! ছেলেকে বললে সে আবার দুশ্চিতায় পড়বে।
কিন্তু কয়েকদিন পর আবার যখন দ্বিতীয়বার নিউইয়র্ক পৌঁছে বাস থেকে নেমেই উৎটক গন্ধে দমবন্ধ হওয়া হওয়ার অবস্থা, তখন নাক চেপে ধরে ছেলেকে বিষয়টি বলি। সে বলে, ‘এটা গাঁজার ধোঁয়ার গন্ধ। যারা সিগারেট খাচ্ছে দেখছো; তারা আসলে গাঁজা খাচ্ছে। সেটার গন্ধ তুমি পাচ্ছ।’ আমি জিগ্যেস করি, ‘গাঁজা খেলে পুলিশ ধরে না?’ সে বলে, ‘এদেশে গাঁজা বৈধ।’ আমি আশ্চর্য হয়ে তার দিখে বড় চোখে তাকাই। সে বলে, ‘তোমার এমন আশ্চর্য হবার তো কিছু নাই।’
দালাল প্রতারক উন্নত বিশ্বের এই শীর্ষদেশ আমেরিকাতেও আছে। আমাদের বউমা আমাদেরকে দাসপ্রথা রদের প্রতীক স্ট্যাচু অব লিবার্টি কাছ থেকে দেখাতে চায়। এটির অবস্থান নিউইয়র্কের হাডসন নদীর একটি দ্বীপ লিবার্টি আইল্যান্ডে। ওই দ্বীপের পাশে আরেকটি দ্বীপ আছে স্ট্যাটেন আইল্যান্ড। নিউইয়র্ক শহর থেকে লোকজন স্ট্যাটেন আইল্যান্ড আসা-যাওয়া করেন ফ্রি (কোনো টাকা পয়সা ছাড়া) ফেরিতে। অনেক মানুষ সেই দ্বীপে বসবাস করেন। দ্বীপে ফেরিটি যাওয়া আসা করে লিবার্টি আইল্যান্ডের এক্কেবারে পাশ নিয়ে। তখন স্ট্যাচু অব লিবার্টি খুব ভালো ভাবে কাছ থেকে দেখা যায়।
সেই ফ্রি ফেরি ছাড়ে ব্যাটারী পার্ক নামের স্থানের কাছে থেকে। ফেরি ঘরে ঢোকার পথে দালাল প্রতারকরা পথ আগলে দাঁড়ায়। তারা পর্যটকদের বুঝায় ফেরিতে উঠতে অনেক ঝামেলা হয়। তাদেরকে পঞ্চাশ ডলার দিলে তারা সাথে নিয়ে যাবে। নতুন আসা পর্যটকরা তাদের পাল্লায় পড়ে ডলার দিয়ে প্রতারিত হয়। আমাদের বউমা আমাদেরকে আগেই সতর্ক করায় আমরা প্রতারিত হইনি। প্রতি এক ঘন্টা পর পর ফেরি ছাড়ে। প্রতিবার ফেরিতে করে তিনশতাধিক জন যেতে পারে। যারা স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখতে যায় তারা ফেরি ভিড়ার সাথে সাথে ঘাটে নেমে ঘুরে গিয়ে অন্য ফেরিতে করে ফিরে আসেন। আর যারা ওই দ্বীপের বাসিন্দা তারা তাদের গন্তব্যে চলে যান। আমরা কাছ থেকেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখেছি।
কোনো পর্যটক নিউইয়র্ক যাবেন, আর রাতের ‘টাইমস স্কয়ার’ ঘুরে না দেখে ফিরে গেছেন, এমন কাউকে মনে হয় পাওয়া যাবে না। এই স্থানটি নিউইয়র্ক শহরের প্রদান বাণিজ্য এলাকার পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রও। প্রায় ১ মাইল (দেড় কিলোমিটার) এলাকা নিয়ে টাইমস স্কয়ার। এখানে রাতে ডিজিটাল বিলবোর্ডের আলোয় দিনের মতো উজ্জল হয়ে রয়। রাত-দিন সর্বক্ষণই বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর কোনো না কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকে।
১২০ বছর আগে এখানে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস সদর দপ্তর করার পর থেকেই এই স্থানের নাম টাইমস স্কয়ার। আছে এখানে ধান্ধাবাজরা। এদের পেশাই ধান্ধাবাজি। ধান্ধাবাজরা বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে এখানে ঘুরে। তাদের সাথে ছবি উঠাতে অনেক পর্যটক কাছে যান। ছবি উঠানোর পরই তাদের হাতে কিছু ডলার দিতে হয়। নতুবা তাদের সাথের যে লোকটা আপনার মোবাইল নিয়ে ছবি ধারণ করেছে, সে মোবাইল ফেরত দিতে গড়িমসি করবে। সুযোগ পেলে মোবাইল নিয়ে কেটেও পড়তে পারে। বউমা আমাদের এসব বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিলো। তাই আমরা কোনো সমস্যায় পড়িনি।
দলবদ্ধ হয়ে গিয়ে এদিক ওদিক হাঁটলে ওখানে ‘মেলায় হারানোর’ মতো ঝুঁকি আছে। কারণ মানুষের এতো সমাগম থাকে যে দলের লোকদের খোঁজে পেতে হয়রান হতে হয়। আমরা ছয়জন গিয়ে ছিলাম। একাধিক বার আমরা হারিয়ে গেছি। মোবাইল থাকায় কল করে করে সবাইকে একত্র করতে হয়েছে।
এইদেশে মশা পাইনি। তবে চায়নিজ রেষ্টুরেন্টে খেতে গিয়ে দুইটা মাছি আমাদের খাবারে এসে বারবার বসেছে। আমার ছেলেকে মাছির উপদ্রবের কথা বলায় সে রাগই দেখালো। বললো, ‘দেশে মশার যন্ত্রনায় টিকা যায় না। এখন ডেঙ্গুতে প্রতিদিন মানুষ মরছে। আর তুমি দুই মাছি দেখে কমপ্লেন করছো! আমার ঘরে কি মশা মাছি দেখেছো। এখানে হয়ত কোনো নোংরা পরিবেশের কারণে এই মাছি এসেছে। আমি কমপ্লেন করলে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আসবে। তাদের উপর মামলা হবে। আমাকে সাক্ষী দিতে হবে। তুমি খেয়ে নাও। আমরা কোনো রকমে চলে যাই।’
আমেরিকা ভ্রমণে দেখেছি কালোদের উপদ্রব, সাদাদের দ্বারা কালোদের অবজ্ঞা, সমকামীদের আচরণ। এসব কিছু অভিজ্ঞতার ঝুলিতে থাকলো। সময় ও সুযোগ মতো সেগুলোও উগরাবো।
যতই আমি অসংগতি কথা লিখিনা কেনো, তাদের উন্নয়ন টেকসই। আমার ছেলে জানালো, ফিলাডেলফিয়া শহর চারশত বছর আগে যে ভাবে পরিকল্পনা করেছিলো এখনো সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী শহর সম্প্রসারিত হচ্ছে। অন্যান্য উন্নয়ন কাজও হচ্ছে। এখানে আইনদ্বারা শৃংখলা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সমাজে শৃংখলা আছে। পুলিশকে সবাই ভয় পায়। বিপদে পুলিশকেই সবারআগে পাশেও পায়। মুক্তবাজার অর্থনীতি হওয়ায় একই মানের একই পণ্য একেক শপিং মলে একেক দাম। উদাহরণ স্বরূপ বলি একটি বড় মলের এক দোকান কোকাকলা ক্যান কিনলাম আড়াই ডলারে। আবার সেই ক্যান পাশের শপিং মলের দোকানে পেলাম দেড় ডলারে। মানুষ তার নিজের কথা প্রান খুলে বলতে পারে, ইচ্ছে মতো চলতে পারে, কারো বলা ও চলা কেউ অপছন্দ করলেও সেটা মেনে নিতে হয়। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। একদিন আমাদের দেশও গণতন্ত্রের এমন সৌন্দর্য নিয়ে এগিয়ে যাবে, আমি এমন স্বপ্ন দেখি।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।