ফরিদপুরে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা
রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুর পৌরসভায় ৪ নং ওয়ার্ডে মুকুল মিয়া (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ফরিদপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ছোনপচা নামক গ্রামে বেলা ২ টার দিকে এমন ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায়- ওবায়দুল মোল্যা (৪৩), মো. মাঈনুদ্দিন মোল্যা (৫২), মামুন মোল্যা (২৮) ও মুন্না মোল্যা (২৬) এই চার জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহত মুকুল মিয়া বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিসমিল্লাহ স্যানেটারি নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী মো. মুকুল মিয়া ও আসামীগণ পরস্পরের আত্মীয় হলেও জমিজমার ভাগাভাগি নিয়ে ও তুচ্ছ ঘটনাকে ইস্যূ বানিয়ে, মুকুল মিয়া ও তার পরিবারকে দীর্ঘ দিন যাবত হয়রানি করে আসছিল আসামীরা। এলাকায় আসামীরা খারাপ প্রকৃতির মানুষ বলে জানা গেছে। আসামীদের কারো কারো নামে পুর্বেও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি মুকুল মিয়ারা একটি নতুন বাড়ী করতে গেলে হিংসার বশবর্তী হয়ে তাদের ওপর অত্যাচারের পরিমান বাড়িয়ে দেয় আসামিরা। এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, নতুন বাড়ীতে থাকতে দিবেনা, মুকুল মিয়ার পরিবারের সবার কল্লা কেটে নিয়ে যাবে ইত্যাদি হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখছিলো আসামিরা। এদিকে চাঁদা না দিয়ে ব্যবসায়ী মুকুল মিয়াদের নতুন বাড়ীর কাজ শেষের দিকে হওয়ার আসামীরা হুমকি ধামকির পরিমান আরো বাড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থায় সন্ত্রাসী ওবায়দুলের শ্বশুর মাঈনুদ্দিন মোল্যা ব্যবসায়ী মুকুল মিয়া ও তার পরিবারদের কুপিয়ে হত্যা করতে আসামীদের অস্ত্র সাপ্লাই দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে মুকুলের পরিবার।
তারা আরো জানান, মাঈনুদ্দিনের দেওয়া অস্ত্র হাতে পেয়ে কতিপয় সন্ত্রাসীরা আরো আগ্রাসী হয়ে উঠে এবং মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে ওই ব্যবসায়ীর উপর সম্মিলিত হামলা চালায় তারা। এরআগে, ওই সন্ত্রাসীরা মুকুলের পরিবারকে প্রতিনিয়ত অকথ্য ভাষায় গালাগালি, হুমকি ধামকি দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করে আসছিলো বলে জানিয়েছেন মুকুলের বড় ভাই মো. ইকরাম মিয়া (৩৫)।
এ বিষয়ে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদ উজ্জামান বলেন, 'বাদির অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই আসাদকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'।
মামলাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা ও ফরিদপুর কোতয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান তালুকদার উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, 'ব্যবসায়ী মুকুলের ওপর হামলার বিষয়ে থানায় তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে সরেজমিনে আসামিদের বাড়িতে গেলে আসামিরা সবাই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে, 'থানায় মামলা করায় আসামিরা টেলিফোনে ব্যবসায়ী মুকুলের পরিবারকে চিরতরে শেষ করে ফেলা বা মেরে এলাকা থেকে বিতারিত করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে' বলে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ীর বাবা কৃষক মো. আ. খলিল মিয়া (৬০)। এমতাবস্থায় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহবান জানিয়েছেন কৃষক খলিল মিয়া।
(আরআর/এসপি/নভেম্বর ২৭, ২০২৪)