স্টাফ রিপোর্টার : সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বরাবর বাংলাদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কতেক প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে।

গত সোমবার রাতে সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে এ প্রস্তাবনা তুলে ধরে সংগঠনটি। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

এসবের মধ্যে বিদ্যমান সংবিধানের প্রস্তাবনা হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, এ প্রস্তাবনা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্যে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করে।

প্রস্তাবনায় ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সম্বলিত সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে বাতিলের অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, এ অনুচ্ছেদটি সংবিধানের মূল প্রস্তাবনার ‘সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার’ নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক যা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করে।

প্রস্তাবনায় ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা’ শীর্ষক অনুচ্ছেদ হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে যা সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি।

প্রস্তাবনায় সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন অপরিহার্য। এতে বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জনজীবনে ও সমাজে বিরাজমান বৈষম্য দূর করা এবং আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’ হওয়ার ক্ষেত্রে এ প্রস্তাবনাগুলো সংবিধানে যুক্ত হওয়া অত্যাবশক।

প্রস্তাবনায় সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদের পর (৫) অনুচ্ছেদ হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যেমন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, জাতীয় নির্বাচন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনসহ সকল ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করার পাশাপাশি (৬) অনুচ্ছেদ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিতের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

(পিআর/এসপি/নভেম্বর ২৭, ২০২৪)