স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণসহ নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। আজ রবিবার বাংলামোটরে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছাড়াই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে প্রণীত বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ এর অধীনে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের আগেই নিয়োগ দেওয়ায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। আইন বাতিল করাটাই যুক্তিযুক্ত হতো।

মুখপাত্র বলেন, নতুন সার্চ কমিটি গঠিত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার কমিশনের আইনটি বদলের পক্ষের যে ইচ্ছা সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছি এবং তাদের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, এই সরকার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের অভিপ্রায়কে পুরোপুরি ধারণ করতে পারছে না। আজও ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্রপতি বহাল রয়েছেন, যিনি গণহত্যাকারী হাসিনার হয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। এই কদিন আগেও তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা গণঅভ্যুত্থানকে সাক্ষাত অস্বীকার করার শামিল। এ কারণে তার অধীনে কোনো ধরণের নিয়োগ বৈধ হতে পারে না। আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অবৈধ রাষ্ট্রপতির অধীনে ফ্যাসিস্ট আইনি কাঠামোয় গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনসহ আইনটি বাতিল করে নতুন আইনের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও অবিতর্কিত নির্বাচন কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।

মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, আগের আইনের ওপর দাঁড়িয়েই গণহত্যাকারী সাবেক সরকার আয়নাঘর, হত্যা ও গুমের মতো নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। সেই কালাকানুনের অধীনে ইসি গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কলঙ্কিত করেছে।

সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা স্পষ্ট লক্ষ করছি, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়েছে। এ কাজ গণঅভ্যুত্থানের কমিটমেন্টের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল! আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র ও জনগণ গণঅভ্যুত্থানের শরিক। কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে, তিনি ছাত্র-জনতার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। তরুণ শিক্ষার্থী সমাজসহ আপামর জনগণের কাছেই তিনি দায়বদ্ধ। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে সংস্কার হবে না, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য আমরা তার কাছ থেকে শুনতে চাই না।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২৪)