পাংশার হাবাসপুরে দিন দিন বেড়েই চলছে ভেজাল দোজালা গুর তৈরি
রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় দিন দিন বেড়েই চলছে দোজলা গুড় উৎপাদন। চিনি ও গুরের গাদ মিশ্রিত ও দেশীয় নিম্নমানের গুর(ঝোলা) গুর দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ভেজাল দোজালা গুর। উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারী পাড়া গ্রামে ও ভাঙ্গুনি পাড়া বেশ কয়েকটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে এই ভেজাল দোজালা গুর। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আজ রবিবার সকাল দশটায় সরজমিনে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামে শাজাহন, মিরাজ ও সুরুজের বাড়িতে আলাদা কারখানায় তৈরি হচ্ছে ভেজাল দোজালা গুর। উপকরণ হিসেবে রয়েছে দেশীয় নিম্নমানের গুর (ঝোলা গুর), ভারত থেকে আমদানিকৃত চিনি ও গুরের গাদ,ফিটকারী ও রং ভালো করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে রাসায়নিক দ্রব্য।
শাজাহানের কারখানার এক শ্রমিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানায়,এল সির মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানিকৃত চিনি ও গুড়ের গাদ সাথে আমাদের দেশের নিম্নমানের ঝোলা গুড় দিয়ে এই গুর তৈরি হচ্ছে।
কারখানার আরেক শ্রমিক সোহান জানায়, শীতের সময় ও রমজানের সময় ছাড়াও বাজারে গুরের চাহিদা সব সময়ই থাকে। এই গুর বিক্রি করলে বেশি লাভ হয়। যার কারনে দেশের ঝোলা গুর ও এল সি দিয়ে আমরা গুর তৈরি করছি।
এলাকার সচেতন মহল জানান, ভেজাল যে কোন জিনিসই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এখন শীতের সময়, সারাদেশে পিঠাপুলির উৎসব হয়। পিঠা তৈরিতে গুড় খুবই প্রয়োজনীয় উপকরণ। শীতের সময় গুড়ের চাহিদা থাকার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেড়ে চলছে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, রাতের বেলা ট্রাক থেকে চিনি ও গাদ মিশ্রিত এবং বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য রং, সোডা, ফিটকিরি সহ ভেজাল গুড় তৈরির বিভিন্ন উপকরণ নামানো হয়। রাতের বেলায় তৈরিকৃত ভেজাল দোজলা গুড়ের টিন ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয়। এই ভেজাল দোজালা গুড় তৈরির উপকরণ রাসায়নিক দ্রব্য রং, সোডা, ফিটকিরি মানব দেহের জন্য খুব ক্ষতিকর।
এ বিষয়ে একটি কারখানার মালিক মোঃ মিরাজ প্রামানিক জানায়, আমি সরাসরি আখ থেকে গুড় তৈরি করি। আমার এখানে ভেজাল কোন গুড় তৈরি হয় না। অন্য কারখানার মালিক আলমাচ ব্যাপারীর সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার পরে জানায়, আমার কোন গুড়ের কারখানা নাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিন্টু বিশ্বাসের বাড়িতে আলমাচ ও মিন্টু একসাথে ভেজাল দোজালা গুড় তৈরি করে আসছে।
শাজাহান বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম আবু দারদা বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি এ বিষয়ে আমি অবগত নই যদি কোন অবৈধ ভেজাল গুড়ের কারখানা থেকে থাকে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
(একে/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২৪)