হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যাক্ত, গাছতলায় ক্লাস
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : স্কুল ভবন পরিত্যক্ত। তাই গাছতলায় ক্লাস হচ্ছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম । এতে দিন দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা কমছে।
কাশিয়ানী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে চারকক্ষ বিশিষ্ট স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যেই ভবনের ছাদসহ দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়তে থাকে। বিমের রড বেড়িয়ে গেছে। তারপরও এ ভবনে চলতো শিক্ষার্থীদের ক্লাস। এ বছর ভবনটি পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ভবনটি ছেড়ে দিতে বলেন। ভবন রেখে গত তিন মাস ধরে গাছতলায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রোদ,বৃষ্টিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ক্লাসের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় দিন দিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমান স্কুলটিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৯১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় পাঠদান চলছে। আর অন্য শ্রেণির ক্লাস পাশের একটি ছোট টিনের ঘরে করানো হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৫ জন শিক্ষার্থী কমেছে।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকি সরকার, চন্দ্র বিশ্বাস বলে, ‘রোদ-বৃষ্টিতে আমরা গাছতলায় ক্লাস করছি। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। দ্রæত আমাদের স্কুল ভবনটি নির্মাণ করে দিয়ে এ অবস্থা থেকে বাঁচাতে হবে।’
শিক্ষার্থীর অভিভাবক জীবন মৌলিক বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গাছতলায় অনেক কষ্টে ক্লাস করে। বৃষ্টি হলে স্কুলে পাঠাই না। কখনো কখনো বৃষ্টিতে ব্যাগ, বই ভিজে যায়। দ্রæত ভবনটি নির্মাণ করা হলে তাদের দুর্ভোগ লাঘব হতো।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পল্লী বিশ্বাস বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে গত তিন মাস ধরে শিক্ষার্থীদের গাছতলায় ক্লাস করাতে হচ্ছে। নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার হলেও এখনও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার। এতে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বেশ সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।’
কাশিয়ানী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করবে ঠিকাদার। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে আমরা ঠিকাদারকে বিশেষ অনুরোধ করেছি। তারা আমাদের অনুরোধে সারা দিযেছে।’
(এমএস/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০২৪)