তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী। আজ বুধবার দুপরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ওই নারী এ ঘটনার ন্যয্য বিচার দাবি করেন।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম শফিকুল ইসলাম বাদশা। তিনি উপজেলার বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।

লিখিত বক্তব্যে ওই গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘ বছর প্রবাস জীবনযাপন করছেন। বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশা সম্পর্কে আমার ভাসুর । তিনি নিয়মিত আমাদের গ্রামের বাড়ি এসে ও বিভিন্ন সময় মোবাইলে আমাদের খোঁজ খবর নিতেন । আমাদের বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ নেই। তাই বাদশা মুন্সীকে আমরা অভিভাবক হিসাবে মান্য করি । গত ২৮ মে বাদশা মুন্সী আমার ইমোতে কল দিয়ে তার স্ত্রীর অসুস্থ বলে জানায়। স্ত্রীর সেবা করার জন্য আমাকে গোপালগঞ্জ শহরের মোহাম্মদপাড়ার বাসায় আসার জন্য বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ বলেন, তখন শাশুড়ির অনুমতি নিয়ে আমি তার গোপালগঞ্জের বাসায় যাই। বাসার ৫ তলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা ছাড়া আর কেউ নেই। পরিবারের সবাই কোথায় জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর দেননি। পরে খারাপ কথা ও অঙ্গভঙ্গি শুরু করেন। তখন আমি চলে আসতে চাইলে আমার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন । এ দৃশ্য তিনি মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। আমি লোকলজ্জা ও স্বামীর ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। পরে গত ৯ জুন আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা আমাকে আবারও তার বাসায় যেতে বলে । তখন আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তাই বাধ্য হয়ে ফের গোপালগঞ্জের বাসায় গেলে ৯ তলার ফ্লাটে নিয়ে শারিরীক মেলামেশা করেন । এর কিছুদিন পরে আবারো তার বাসায় যেতে বলেন । তখন আমি অতিষ্ট হয়ে আমার বাবার বাড়ি ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানাই।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা দায়রা ও জজ কোর্টের নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে শফিকুল ইসলাম বাদশাকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্ত করছে। তারপর থেকে মামলা তুলে নিতে আওয়ামী লীগ নেতা ও তার লোকজন আমাদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই গণমাধ্যমের সহযোগিতায় ন্যয্য বিচার প্রত্যাশা করছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বাদশার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তাকে ক্ষুদ্র বার্তা পাঠালেও সারা মেলেনি। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ২০, ২০২৪)