শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে ডাম্প ট্রাক চলাচল নিয়ে দুইপক্ষের বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এক পক্ষ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়ছেন, পথচারী ও যানবাহনের বাহকেরা। এ বিরোধের জের ধরে দিনাজপুরের খানসামা জিয়া সেতুর পশ্চিম পাড়ের জিরো পয়েন্টে খানসামা- বীরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে বাঁশ দিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে বীরগঞ্জের কাশিপুর বালুঘাটের সঙ্গে সম্পৃক্ত বালু ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। 

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্থানে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করা ব্যাটারিচালিত ভ্যান, ইজিবাইক, পাগলু ও ট্রাক দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এমনকি একটি অটোর গ্লাস ভাঙচুর করে। সেই সঙ্গে রোগীবাহী বাহনগুলো এ সময় চরম ভোগান্তিতে পড়ে। তবে সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের আশ্বাসে প্রায় ঘণ্টাখানেক পর চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জামাল উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগী নিয়ে দিনাজপুর যাব অপারেশন হবে কিন্তু এখানে এসে দেখি রাস্তা বন্ধ। এটা কোনো কথা কিছু হলেই রাস্তা অবরোধ। তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দেখবে কে?’

বীরগঞ্জের ১০ নম্বর মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফেরদৌস ইসলাম বলেন, ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে জিয়া সেতু দিয়ে আমাদের কাশিপুর ঘাটের বালুবাহী ডাম্প ট্রাক চলাচলে বাঁধা দিচ্ছে একটি পক্ষ। সরকারি নিয়ম মেনে ইজারা নেওয়া ঘাট থেকে যদি আমরা বালু বহন করতে না পারি, তাহলে তো আমাদের লোকসান হবে। প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা সুষ্ঠু সমাধান চাই।’

উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত জিয়া সেতু উদ্বোধন করেন। এরপরে অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার এটি সংস্কার করেনি। বরং বালুখোরেরা অবৈধভাবে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অবৈধ ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক এই সেতুতে পারাপার করান। এই বালু সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি।’

এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি। দ্রুত সময়ে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খানসামা জিয়া সেতু পূর্ব পাড়ে ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক ড্রাইভারদের নিরুৎসাহিত করে ব্যানার টাঙিয়ে দেয় স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তাদের দাবি ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুতে যেন এসব যান চলাচল না করে। এইজন্য তারা ড্রাম চলাচলে নিষেধ করে। এরপরই থেকেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

(এসএস/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০২৪)