রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মাছকান্দি পশ্চিম পাড়ায় আবারও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে মাসুদ মোল্যা (৫০) নামক এক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এর আগে বুধবার (১৩ নভেম্বর) ফরিদ মোল্যার নেতৃত্বে ৮/১০ টি মোটরসাইকেল যোগে ২০/২৫ জন লোক মাসুদ মোল্যার বাড়ীতে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ করেছেন মাসুদ মোল্যার পরিবার। লুটপাটের সময় দুর্বৃত্তরা মাসুদ মোল্যার পরিবারের সদস্যদের মারধর সহ বাড়ী থেকে নগদ দুই লাখ টাকা ও এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল ছিনিয়ে নিয়েছে বলে জানান মাসুদ মোল্যার স্ত্রী মিসেস জাহানারা বেগম।

এই ব্যাপারে আহত মাসুদ মোল্যা স্থানীয় মধুখালী থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় মধুখালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত আলীর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এসআই শওকত আলী জানান, 'ফরিদ মোল্যাদের ধান খেতে মাসুদ মোল্যার ছাগল ঢুকে খেত নষ্ট করার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বুধবার বিকেলে ও আজ (বৃহস্পতিবার) দুই দফার মারামারি সংগঠিত হয়। এই বিষয়ে মধুখালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মাসুদ মোল্যা, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করছি। দুই পক্ষের সবাই পরস্পরের আত্মীয় বলেও জানতে পেরেছি। মাসুদ মোল্যার শরীরে আঘাতের চিহ্নের ছবিসহ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। তদন্ত শেষে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে পারবো'।

মাসুদ মোল্যার পরিবারের বক্তব্য ও মামলার এজহারে উল্লেখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফরিদ মোল্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, 'মাসুদ মোল্যা যেসব অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা উভয় পক্ষই একে অপরের আত্নীয় স্বজন। এটা আমরা পারিবারিকভাবে সমাধান করে ফেলবো। তিনি আরও জানান, ' মাসুদ মোল্যার ছাগলে আমাদের ধান খেত নষ্ট করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার বৃদ্ধ বাবার সাথে মাসুদ মোল্যার স্ত্রী ও মেয়ে অশোভন আচরণ করে। পরে আমি বুধবার বিকেলে শুনতে গেলে ওই সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। আজকে সকালেও আমার বাবার সাথে খারাপ আচরণ করেন তারা, তাই আজকে (বৃহস্পতিবার) সকালে আবারও সামান্য চিল্লাচিল্লি হয়েছে মাত্র'।

এদিকে, ভুক্তভোগী মাসুদ মোল্যা জানান, 'আমাকে অনেক মারধর করা হয়েছে। আমার পরিবারের নারী সদস্যদের বিশ্রী ভাষায় গালাগাল করে গায়ে হাত দিয়েছে। আমার হাত, পা, মাথা ও পিঠে ওরা আঘাত করেছে। তিনি আরো জানান, আমার এক ঘরের তোশকের নিচে থেকে ২ লাখ টাকা ও আরেক ঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে আমার স্ত্রীর কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আমি এর সঠিক বিচার চাই'।

এই বিষয়ে এলাকার একাধিক সূত্র ব্যাপারটি মীমাংসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে। তবে, অতি শীঘ্রই এই ঘটনার মীমাংসা না হলে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরণের সংঘাত সংগঠিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন ওই এলাকার স্থানীয় মুরব্বিগণ।

(আরআর/এএস/নভেম্বর ১৪, ২০২৪)