বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের অভিযান
গোপালগঞ্জে পাখি ক্রয়ের অপরাধে ২ জনকে কারাদণ্ড
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ২ পাখি ক্রেতাকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সুযোগ বুঝে শিকারিদের নিকট স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে সৌখিন ক্রেতাদের কাছে উচ্চমূল্যে এসব পাখি বিক্রি করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
গতকাল বুধবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত এ দণ্ডাদেশ দেন। পরে পাখিগুলো আকাশে উড়িয়ে অবমুক্ত করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত জয় রহমান ও ইসহাক মোল্লা কান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা। জয় রহমানকে ১০ দিনের ও ইসহাক মোল্লাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বন অধিদপ্তর আগারগাঁও ঢাকার বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আস সাদিক বলেন, বুধবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের লখন্ডা গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার পাখি ক্রয় করছিল তারা। গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে গোপালগঞ্জ বন বিভাগ এবং বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সেখানে উপস্থিত হয়ে হাতে-নাতে তাদের ধরে ফেলে। এ সময় সেখান থেকে ৩৮টি পাখি জব্দ করা হয়। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দোষ স্বীকার করলে আদালত জয় রহমানকে ১০ দিনের ও ইসহাক মোল্লাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে বিচারক পাখিগুলোকে আকাশে উড়িয়ে অবমুক্ত করেন।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, আটক ক্রেতাগণ ভবিষ্যতে আর বন্যপ্রাণি ক্রয় না করার অঙ্গিকার করেছে। বিচারের রায় ঘোষণার পর তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এর ধারা ৩৮ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, ক্রয় বিক্রয়, আটক রাখা, ইত্যাদি দণ্ডনীয় অপরাধ। বনবিভাগের নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে ইতোপূর্বে পাখি শিকার, ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি অপরাধে ৩ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পাখি প্রকৃতির বড় সম্পদ কেউ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্টের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান প্রতীক দত্ত।
অভিযানে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে অতীথি পাখি শিকারের বিভিন্ন স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। আসামিরা এ সময় তাদেরকে বলেন তারা কোটালীপাড়ার লক্ষন্ডা বিল এবং নিতাই বিল, পাশাপাশি মাদারীপুর জেলার রাজৈর বিলে নিয়মিত জাল পেতে অতীতজি পাখি শিকার করেন। আসামি হতেপ্রাপ্ত এ তথ্যের ভিত্তিতে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমণ ইউনিট ও সামাজিক বন বিভাগ গোপালগঞ্জ পরবর্তীতে উক্ত বিল সমূহের রাত ব্যাপি অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় এই তিনটি বিল হতে প্রায় ১০ টির মত প্রায় ২০ বিঘা বিস্তৃত ফাঁদ জব্দ করে এবং পুড়িয়ে দেয়।
এ সময় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বন অধিদপ্তর আগারগাঁও ঢাকার বন্যপ্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক, গোপালগঞ্জ জেলা বন কর্মকর্তা বিবেকানন্দ মল্লিকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০২৪)