বীরগঞ্জে সেতু মেরামত না হওয়ায় দুর্ভোগে ছয় গ্রামের মানুষ
শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের বীরগঞ্জের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার একমাত্র পথে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ছয় গ্রামের মানুষ। পাকা সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর জনসাধারণ।
বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের সিংড়া শালবন জাতীয় উদ্যান এবং প্রায় ছয় গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সেতু নির্মাণ করলেও তা কাজে আসছে না। নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যে বন্যায় ভেঙ্গে যায় সেতু। দুই বছর অতিবাহিত হলেও ভাঙ্গা সেতু মেরামত হয়নি। এতে ওই এলাকার নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী সহ ছয় গ্রামের হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরেই সড়কের মাঝে থাকা খালের উপর ভেঙ্গে পড়ে আছে সেতুটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অনিয়মের মধ্য দিয়ে সেতু তৈরীর ফলেই নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই বন্যায় ভেঙ্গে গেছে সেতুটি। এরপর বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি সংস্কার বা পুনঃ নির্মাণের ব্যবস্থা করেনি কেউ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার দু'পাশের মাটি সরে ডেবে গিয়ে ভেঙে নষ্ট হয়ে রয়েছে সেতুটি। কাঙ্খিত সেতুটির পাশ দিয়ে হেঁটে আশপাশের প্রতিবেশীর বাড়ির উঠানের ভিতর দিয়েই চলাচল করছে ছোট যানবাহনসহ লোকজনকে।
ওই এলাকার কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, হাট বাজারে বা উপজেলা শহরে যেতে হলে প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এখন তারা অনেক পথ ঘুরে এ পথে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ বছর আগে বন্যার পানির জন্য সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সেতুটি ডেবে গিয়ে সড়কের সংযোগ অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পুনরায় সেতুটি ঠিক না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রায় ছটি গ্রামের মানুষদের। ওইসব গ্রামের বাসিন্দারা বেশির ভাগ কৃষক। তাই তাদের কৃষি পণ্য সার, কীটনাশক, বীজ, ডিজেল, সেচযন্ত্র ও নিত্য ব্যবহার্য নান জিনিজপত্র এ পথেই আনা নেওয়া করতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির হোসেন বলেন, সেতুটির জন্য মানুষের অনেক বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আমি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি।
ভোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রাজিউর রহমান রাজু বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে স্কুল কলেজে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ও জরুরী হাসপাতাল গামী রোগীদের কেউ। সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হলে এলাকাবাসীর অনেক উপকার হবে এবং সিংড়া শালবন জাতীয় উদ্যান ভ্রমন করতে সহজ হবে। সেতুটি না থাকার কারণে সিংড়া শালবন জাতীয় উদ্যানে বর্তমানে পর্যটন অনেক কমে গেছে।
সিংড়া জাতীয় উদ্যান কর্মকর্তা গয়েয়া প্রসাদ পাল জানান, গত বছর আংশিক বন্যায় জাতীয় উদ্যানে চলাচলের সেতুটি ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। সেসময় সেতুটি পুনঃ নির্মাণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে আবেদন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সেতু ভেঙে যাওয়ায় পর্যটনদের আনাগোনা অনেকে কমে গিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী জিবরীল আহাম্মদ বলেন, আমরা সরকারের কাছে সেতুটির জন্য আবেদন করেছি। সরকারি ভাবে বরাদ্দ পেলেই সেতুটির সংস্কার বা পুনঃ নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এসএস/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০২৪)