আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় এবং লেবাননে ইসরায়েলের যে যুদ্ধ চলছে, তা মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অনেক দূরে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

শনিবার (৯ নভেম্বর) ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তৃতায় এই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন তিনি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষতিকর প্রভাব শুধুমাত্র পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি অনেক দূরেও এর প্রভাব পড়তে পারে, যা বিশ্বের মনে রাখা উচিত।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজা থেকে সামরিক শক্তিকে লেবাননে স্থানান্তর করেছে দখলদার বাহিনী। গত সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লহ ও হামাসপ্রধান ইয়াহহিয়া সিনওয়ারসহ হামাস-হিজবুল্লাহর কয়েকডজন কমান্ডারকে সরাসরি হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এছাড়া হামাসপ্রধান ইসামাইল হানিয়াকেও তেহরানে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যদিও হানিয়া হত্যার দায় স্বীকার করেনি দখলদার বাহিনী।

হামাস-হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যার পর ইরান এবং ইসরায়েল দুইবার একে অপরের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় উভয় পক্ষেরই বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ ইরানের ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তাতে অন্তত চারজন ইরানি সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। ওই হামলার পাল্টা জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে খামেনেয়ির দেশ।

এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় সাড়ে ৪৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া লেবাননে তিন হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। গাজায় চলা মানবিক সংকটের মধ্যে যোদ্ধাদের কাছে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের দাবি করে ওই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে হামাস।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে কাতারের একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজায় শান্তি স্থাপনের জন্য সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে না নেয়া এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাস অস্বীকৃতি জানানোয় যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে হামাসকে কাতার ত্যাগ করার নোটিশ দিয়েছে দেশটির সরকার। তবে বিষয়টি নিয়ে হামাস এবং দোহার তরফে এখনও সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের এই হুঁশিয়ারি যুদ্ধের পরিধি বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ১১, ২০২৪)