একে আজাদ, রাজবাড়ী : দখল,দূষণ আর খননের অভাবে হুমকির মুখে রাজবাড়ী পাংশার চন্দনা নদী। নদীটি পরিণত হয়েছে মরা খালে। পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। পানি দূষিত হয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। নদীর অধিকাংশ জায়গার দুই পাড়ও অবৈধ দখলদারদের দখলে। কেউ নির্মাণ করেছেন দোকানপাট। আবার কেউ বসতবাড়ি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর জমি দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে নদীটি। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দখল, দূষণ রোধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চন্দনী নদীটি এখন মৃতপ্রায়। দুই পাড় দখল হতে হতে নদীর ধারা হয়েছে সরু। আর আশপাশের জায়গায় ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়েছে নদীর অনেক এলাকা। দখল-দূষণে হুমকির মুখে অস্তিত্ব। এলাকাবাসীর ভাষ্য,যে যেভাবে পারছে সেভাবে দূষণ করছে নদী। পানি না কম থাকায় নদীর মধ্যে বর্জ্য ফেলা থেকে শুরু করে হচ্ছে দখল। চন্দনীর উৎপত্তিস্থল পদ্মা নদী থেকে এবং শেষ হয়েছে গড়াই নদীতে মিশে। বর্ষা মৌসুমে এ নদীতে সামান্য পানি থাকলেও শীতকালে অধিকাংশ জায়গায় জেগে ওঠে চর। আবার নদীর যে অংশে পানি থাকে সেখানকার স্থানীয় লোকেরা নদীতে বাঁধ দিয়ে রাখেন। ফলে বন্ধ হয়ে যায় পানির প্রবাহ। এক কালের খরস্রোতা চন্দনী নদী এখন মৃতপ্রায়। অবৈধ দখলদাররা প্রতিনিয়তই গ্রাস করে চলেছে নদীর দুই পাড়। অব্যাহত দখলের কারণে নদীটি পরিণত হয়েছে শীর্ণ খালে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এই চন্দনী নদীর অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এবং সচেতন মহল।

স্থানীয় কবীর জানান,‘বাড়ি ও বাজারের ময়লা ফেলা হয় এই নদীতে। বাধা দেয়ার কেউ নেই। যে যার ইচ্ছে মতো ময়লা ফেলছে।’

রুহুল নামে এক ব্যক্তি বলেন,‘স্থানীয় পর্যায়ে বারবার আন্দোলন- সংগ্রাম করার পরও কেন এই নদী দখলদারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে না,তা বোধগম্য নয়। নদীমাতৃক বাংলাদেশ নদী পাড়েই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শহর-উপশহর। পাংশাও তার ব্যতিক্রম নয়। শহরের সব ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হয়। পরিবেশ রক্ষায় যত দ্রুত সম্ভব চন্দনী নদীকে বাঁচাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন,‘অতি দ্রুতই নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(একে/এএস/নভেম্বর ১০, ২০২৪)