নির্মানাধীন গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের ২ শ’ স্থানে ভাঙন
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। দীর্ঘ ৪ বছরে ধরে নির্মাণাধীন এ সড়কের সোল্ডারের ২শ’ স্থানে বৃষ্টিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তা দেবে গেছে । আবার কোথাও উঠে গেছে কার্পেটিং।
ঢিলেঢালাভাবে সড়কের কাজ করা হচ্ছে । এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে চলাচলকারীরা আশংকা করেছেন।
গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে । এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, ফরিদপুর, খুলনা, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী সহ বেশ কয়েকটি রুটে অন্তত ৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। যাত্রীদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে সড়কটি মেরামত ও সম্প্রসারণের উদ্দ্যোগ নেয় সরকার।
২০২০ সালের জুন মাসে একনেক সভায় এ প্রকল্পে ৬শ’ ১২ কোটি ৫৮ লাখ ১৭ হাজার টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয় । পরে টেন্ডার আহবান করা হয়। সড়কটির সংস্কার ও সহজিকরণের কাজ পায় ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিলো ২০২২ সালে ৩০ জুন । ৩ দফায় কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন করা হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ে আরো প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এখনও অসম্পন্ন রয়েছে সড়কের প্রায় ৩০ ভাগ কাজ।
সড়কে চলাচলকারী মাদারীপুর জেলার চরমুগুরিয়া এলাকার বাসিন্দা সাগর শেখ (৫০) বলেন, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া অংশে রাস্তার দু’পাশে সোল্ডারে বৃষ্টিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেঙে যাওয়া স্থানগুলোকে ঢেকে রাখা হয়েছে বালু দিয়ে।
বাস চালক বরকত মিয়া (৩৮) বলেন, নির্মাণাধীন সড়কে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এমন অনেক অংশে রাস্তা দেবে গেছে। বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে কার্পেটিং। এতবড় বাজেটের সড়কে এমন অবস্থা আমরা প্রত্যাশা করিনি। কি কারণে এমন হয়ে তা তদন্ত করে দেখতে হবে।
ভ্যান চালক মোস্তফা মিয়া (৫৫) বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কের দু’ পাশ ভেঙে যাচ্ছে। উঠে যাচ্ছে পিচ। সৃস্টি হচ্ছে গর্তের। সড়ক নির্মাণে অনিয়ম হয়ে থাকলে এমনটি হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, সড়কটি ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যারা বাস্তবায়ন করছে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। উঠে গেছে কার্পেটিং। ২শ’ স্থানে সোল্ডার ভেঙ্গেছে। একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এখানেও তেমটি ঘটতে পারে বলে ধারনা করছি । যেহেতু সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। তারপরও সড়ক বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ভেঙে যাওয়া স্থানগুলো মেরামত করে দেয়া হবে জানিয়ে গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম বলেন, কোথাও কোন সমস্যা হলে আমরা ঠিকাদারকে জানাচ্ছি। আবহাওয়া প্রতিকূলতার কারণে কিছু ব্যাত্যয় হয়েছে । তবে আবহাওয়া ঠিক হলে আমরা সব রিপিয়ার করে ফেলবো।
(এমএস/এএস/নভেম্বর ১০, ২০২৪)