শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুর সদর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও তার পরিবার সদস্যদের নামে-বেনামে বিগত সময়ে ক্রয়কৃত সম্পদের দলিলপত্র অনুসন্ধান করে অনুলিপি প্রদানের জন্য জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ প্রদান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশন সদর দপ্তর ঢাকা থেকে ডাকযোগে প্রেরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশ পত্র গত ৬ নভেম্বর বিকেলে প্রাপ্ত হয়েছেন বলে দিনাজপুর জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ সাজেদুল হক আজ শুক্রবার মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, এ পত্রে দিনাজপুর সদর- ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক ইকবালুর রহিম ও তার স্ত্রী, দু'কন্যা এবং এক পুত্রের নামে-বেনামে বিগত সময়ে ক্রয়কৃত সম্পদের দলিলপত্র অনুসন্ধান করে অনুলিপি প্রদানের জন্য জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

গতকাল রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে দুর্নীতি দমন সদর দপ্তর ঢাকা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। দিনাজপুর সদর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানা, দু'কন্যা ইশরাক মারজিয়া ও রাইসা মুমতাহিনা এবং এক পুত্র রাফিদুর রহিম এর নামে-বেনামে দিনাজপুর সদর ও জেলার অন্য উপজেলা গুলোতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শাসন আমলে কোন জমি,অবকাঠামো, মিল,কারখানা বা অন্য কোন মূল্যবান সম্পদ ক্রয় করা হয়ে থাকলে, ওই দলিলের অনুলিপি অনুসন্ধান পূর্ব তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূত্রটি জানায়, দুদক সদর দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশিত পত্র পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দু'জন অফিস সহকারীকে এ অনুসন্ধান কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা বিগত সরকারের সময়ে নির্দেশ অনুযায়ী জেলা রেজিস্টার অফিসে সংরক্ষিত বালাম বহি অনুসন্ধান করবেন। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য পাওয়া গেলে দুদক সদর দপ্তরে প্রেরণ করা হবে।

প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দিনাজপুর ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম এর বিরুদ্ধে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে, তার অবৈধ ক্ষমতার অপ-ব্যবহার, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ পূর্বক, নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য দুদক সদর দপ্তরের পরিচালক, সৈয়দ তাহসিনুল হক কে দলনেতা করে, সহকারী পরিচালক, মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী সদস্য সচিব ও উপ-সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান খানকে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে দিনাজপুর সমন্বিত জেলা দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আতাউর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এ অনুসন্ধানটি দুদক সদর দপ্তর থেকে চালানো হচ্ছে। দিনাজপুর জেলায় তাদের অনুসন্ধানে এ কার্যালয় থেকে কোন সহযোগিতা চাওয়া হলে তা করা হচ্ছে।

সূত্রটি জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম থেকে দুদক অনুসন্ধান টিম কাজ শুরু করেছেন। তারা ঢাকায় তার নিজের নামে ও পরিবার সদস্যদের নামে বাসা, একাধিক ফ্ল্যাট ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাব জমাকৃত অর্থ এবং এফডিআর তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

(এসকেকে/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২৪)