দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : ঢাকার ধামরাইয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী-সন্তানের সামনেই কুলসুম আক্তার (৩০) নামে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনা খাতুন (৬০) নামে নিহতের নানী শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

নিহত কুলসুম আক্তার ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার ইয়ার হোসেনের স্ত্রী। তিনি পাঁচ বছরের এক ছেলে সন্তানের মা ও চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গ্রেপ্তার কৃত আমিনা খাতুন ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের বান্নাখোলা এলাকার বাসিন্দা।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও নিহতের শ^শুর আয়নাল পাগলা (৫৫), শাশুড়ি সূর্য বানু (৪৫), ভাতিজী ইয়াসমিন আক্তার (১৯) ও ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের বান্নাখোলা এলাকার বাসিন্দা ও নিহতের নানী শাশুড়ি আমিনা খাতুন (৬০)। তিনি ১০ থেকে ১২ দিন আগে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন।

নিহতের স্বজন ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছয় বছর আগে ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার আয়নাল পাগলার ছেলে ইয়ার হোসেনের সঙ্গে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া এলাকার হাসান আলীর মেয়ে কুলসুম আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তখন থেকেই তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করতো।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে শাশুড়ির রান্না ঘরে গৃহবধূ কুলসুম আক্তারের পালিত মুরগি যাওয়াকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কুলসুম আক্তারকে তার স্বামী ইয়্রা হোসেন ও ৫ বছরের ছেলে ইয়াসিনের সামনেই শ^শুর আয়নাল পাগলা, শাশুড়ি সূর্য বানু, নানী শাশুড়ি আমেনা খাতুন, ভাতিজী ইয়াসমিন আক্তার তাকে শ্বাসরোধ করে ও বুকের ওপর উঠে ইট দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এসময় তার স্বামী ইয়ার হোসেন থামাতে গেলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এক পর্যায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহতের কপালের ডান চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম, মুখ, পিঠসহ সারা গায়ে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে।

নিহতের স্বামী ইয়ার হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীর পালিত একটি মুরগি রান্না ঘরে গিয়ে আমার মায়ের আটা নষ্ট করার কারণে আমার সামনেই আমার মা-বাবা, নানী ও ভাতিজী মিলে কুলসুমকে পিটিয়ে ও শ^াসরোধ করে হত্যা করেছে। আমি থামাতে গেলে আমাকেও পিটিয়েছে।

নিহতের ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, আমার বোনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

খবর পেয়ে ধামরাই থানার এসআই আজাহারুল ইসলাম গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন।

ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনের নামে মামলা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(ডিসিপি/এএস/নভেম্বর ০৮, ২০২৪)