স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল : অসময়ে যমুনার ভাঙনের কবলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলী গ্রামের দশখাদা এলাকা। তীব্র ভাঙনের ফলে ১৫টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে ভাঙনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। আতঙ্কে রয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতিনিয়ত শত শত বালুবাহী বাল্কহেড নদীর তীর ঘেষে চলাচল করায় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। ফলশ্রুতিতে নদী তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে ১৫টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে ওই পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নদীতীর ঘেষা দেড় শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, শুষ্ক মৌসুমেও যমুনা রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় নদী তীরবর্তী চরপৌলী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে যমুনার দশখাদা এলাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে ১৫টি ঘর-বাড়ি যমুনার গর্ভে চলে যায়। পাউবো দ্রুত ভাঙনরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামি কয়েকদিনের মধ্যে জেলার সবচেয়ে বড় চরপৌলী গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে ভাঙন আতঙ্কে অনেকে ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। তারা অতিদ্রুত শুষ্ক মৌসুমের ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। মঙ্গলবারের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক জানান, তারা দিনমজরী করে দিনাতিপাত করেন। এক সময় জমি-জমা, অর্থ-সম্পদ সবই ছিল। রাক্ষুসী যমুনা সব কেড়ে নিয়েছে। তারা দুজনেই চারবার যমুনার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবারের ভাঙনে তারা পথে বসে পড়েছেন। সরকারি সহযোগিতা না পেলে তারা আরও বিপাকে পড়বেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম খা, সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, ইতোপূর্বে কয়েক দফায় তাদের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অল্পকিছুদিন আগে তাদের এলাকার আড়াই সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি যমুনা কেড়ে নিয়েছে। মঙ্গলবারও ১৫টি পরিবারের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়েছে। নদীতীর রক্ষায় নিম্নমানের জিওব্যাগ ফেলায় অসময়ে যমুনার স্রোতে তীর ভেঙে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঠিকাদারের শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন তারা।

কাকুয়া ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে হঠাৎই যমুনাতীরে ভাঙন শুরু হয়। এতে ১৫ পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না করা হলে তাদের খোলা আকাশের নিচে অথবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, যমুনা নদী সব সময়ই আগ্রাসী- এটা যে কোন সময় রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারে। ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানা হয়েছে। অসময়ে যমুনার ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

(এসএম/এসপি/নভেম্বর ০৭, ২০২৪)