মাদারীপুর প্রতিনিধি : অনিয়মের দায়ে বিভাগীয় মামলার আসামিসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান মোল্লা বাচ্চুকে মাদারীপুরের পৌর অফিস সংলগ্ন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ায় বিক্ষোভ করেছে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার সকালে নিযোগ বাতিলের দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনে দুই ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। পরে তারা আবারও বেলা ১২ টার দিকে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। সবশেষে তারা মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে শিক্ষক আব্দুর রহমান মোল্লা বাচ্চুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতী, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অভিযোগ এনে স্মারকলিপি দেয়া হয়।

এর আগে ঐ অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল রহমান মোল্লা বাচ্চু পুলিশ লাইনস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। এই শিক্ষকের বদলী বাতিল করার দাবীতে এই কর্মসূচি পালন করেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

স্মারক লিপি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৫ নভেম্বর আব্দুর রহমান মোল্লা বাচ্চুকে মাদারীপুর পৌর অফিস সংলগ্ন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্যে নিয়োগ দেয়। বিষয়টি বুধবার সকালে জানাজানি হলে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম আর জালিয়াতির কারণে ৬টি জিআর মামলা ছিল। যে কারণে তিনি ৩ মাস ৬ দিন জেল হাজত খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বিভাগীয় মামলা চলছে। এমন একজন বির্তকিত শিক্ষককে এই বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ায় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। পরে তারা জেলা প্রশাসক মোসা. ইয়াসমিন আক্তারের কাছে ঐ শিক্ষকের অপরাধ তুলে ধরে নিয়োগ বাতিল চেয়ে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এসময় একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা তার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন।

বিদ্যায়ের তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মা সুমনা আক্তার বলেন, পৌর মডেলের মতো এমন একটি সুনামধন্য বিদ্যালয়ে আব্দুর রহমান বাচ্চুকে নিয়োগ দেয়ায় আমরা খুবই মর্মাহত। তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তিনি নিজেও ভালোমানের একজন শিক্ষক নয়, তারপরেও কেন তাকে এ বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিলো, বিষয়টি বুঝছি না। তাই তাকে এখান থেকে বাদ দিতে হবে। না হলে এখানে আমাদের সন্তানদের পড়াবো না।

বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফারজানা আক্তার বলেন, শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু দুশ্চরিত। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে। তাই জেলার মডেল স্কুলে এমন একজন শিক্ষক কখনও কাম্য নয়। তাই তার বদলী বাতিল করা হোক।

বিদ্যালয়ের আরেক অভিভাবক ইসরাত জাহান বলেন, শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু দুশ্চরিত। তাকে কিছুতেই আমরা এই বিদ্যালয়ে মেনে নিবো না। কারণ এখানে আমাদের মেয়েরা পড়াশুনো করে। এমন বির্তকিত শিক্ষককে আমরা চাই না। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে মামলাও আছে। জেলও খেটেছেন। এমন শিক্ষককে কিভাবে জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন, তা ভেবে পাই না। তাই তার নিয়োগ বাতিল করার দাবী জানাই।

অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রহমান মোল্লা বাচ্চু বলেন, আমাকে সরকারীভাবে যোগদান করতে বলা হয়েছে। আমি সরকারী আদেশ অনুসারে বিদ্যালয়ে যোগ দিবো। কোন অপশক্তির কাছে মাথা নত করবো না।

(এএসএ/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০২৪)