আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামীকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন ৭৭ মিলিয়নের বেশি ভোটার। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বা ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস কারোই নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তা না থাকলেও কোনোরকম ভাটা পড়ছে না ভোটদানে। বরং ধারণা করা হচ্ছে শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি ভোট কাস্টিং হবে এবারের মার্কিন নির্বাচনে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইটাও হবে হাড্ডাহাড্ডি। আর সে কারণেই ভোটগ্রহণ শেষে এবার দ্রুতই ফলাফলের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে না বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রগুলোতেই অবশ্য রাজ্য ও কাউন্টির ওপর নির্ভর করে সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে যাবে। সাধারণ নিয়ম হল যে আপনি যত পশ্চিমে যাবেন, অঞ্চলগত পার্থক্যের কারণে তত দেরিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়। সময়ের ব্যবধানের কারণে এমনও দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু আলাস্কা ও হাওয়াইয়ের মতো অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা তখনও ভোট দিচ্ছেন।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে গণনা শুরু হবে। সাধারণত মার্কিন ভোটাররা এই ধারণায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে তারা নির্বাচনের রাতে দেরিতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় বা অন্তত পরের দিনের ভোরবেলায় জানতে পারবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হতে চলেছেন। যেমন ২০১৬ সালে যেবান ট্রাম্প প্রথমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, নির্বাচনের পরদিন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ২০১২ সালে, যখন বারাক ওবামা দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন, তখন ভোটের দিনই মধ্যরাতের আগে তার বিজয় অনুমান করা হয়েছিল।

তবে এবার তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ সুইং স্টেটগুলোর জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্প ও কমলা দুজনই একে অপরের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন এবং ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত সময় শেষে দুজনের মধ্যকার ব্যবধান খুব সংকীর্ণ হয়ে পারে। ফলে এসব স্টেটে ভোট পুনঃগণনার প্রয়োজন হতে পারে।

এমন ঘটনা ঘটেছিল ২০০০ সালের জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং আল গোরের মধ্যকার লড়াইয়ে। ভোটগ্রহণ ৭ নভেম্বর সমাপ্ত হলেও ওইবার ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল ফলাফল জানার জন্য।

২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশেও এরকম বিলম্ব হয়েছিল। ওই বছর ৩ নভেম্বর ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছিল, তবে মার্কিন টিভি নেটওয়ার্কগুলো ৭ নভেম্বর শনিবার সকাল পর্যন্ত জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করেনি। নির্বাচনের রাতে ট্রাম্প সমর্থকরা নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল। কিন্তু বাস্তবে ট্রাম্প ও বাইডেন উভয় প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের কাছাকাছি ছিল। বেশির ভাগ রাজ্য ফল ঘোষণা করলেও পেনসিলভেনিয়া ও নেভাদাসহ কয়েকটি সুইং স্টেটে ফলাফল ঝুলে ছিল। শেষমেশ ৭ নভেম্বর বাইডেনের জয় নির্ধারিত হয় সুইং স্টেটের ফলাফলে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০২৪)