ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ‘প্রকৃতির জলাধার, মানবোনা টেন্ডার স্লোগানে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সিংগীয়ায় বলুহর বাঁওড় পাড়ে বলুহর, জয়দিয়া, কাঠগড়া, ফতেপুর, মর্জাদ ও বেড়গোবিন্দপুরসহ দেশের সকল বাঁওড় ইজারা বাতিল, ভুক্তভোগী মৎস্যজীবীদের প্রথাগত মালিকানার নিশ্চয়তা, ন্যায়সঙ্গত অধিকার সংরক্ষণ ও রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার সকালে বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন সংগঠনের আয়োজনে গণবিক্ষোভে ভুক্তভোগী মৎস্যজীবী জনগোষ্ঠীর নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুরা সমবেত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন ঝিনাইদহ-যশোর এর আহ্বায়ক নির্মল হালদারের সভাপতিত্বে সংগঠনের সদস্য সচিব নিত্য হালদার ও সংগঠনটির বলুহর, জয়দিয়া, কাঠগড়া, ফতেপুর, মর্জাদ ও বেড়গোবিন্দপুর থেকে আগত সদস্যরা অংশগ্রহন করেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, মৎস্যজীবী বাঁওড় আন্দোলনের উপদেষ্টা ও বাঁওড় গবেষক সুজন বিপ্লব, সংগঠনের উপদেষ্টা আবু তোয়াব অপু, আন্দোলনের সদস্য শীলা হালদার, পুটি হালদার, আরতি হালদার, সুধীর হালদার, সুশীল হালদার, শীতল হালদার, ইন্দ্রজিৎ হালদার প্রমুখ।

সমাবেশে মৎস্যজীবী বাঁওড় আন্দোলনের উপদেষ্টা ও বাঁওড় গবেষক সুজন বিপ্লব বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর মত আমরাও রাজনৈতিক অধিকারহীনতার মধ্যে আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে হতাশ ও হতদ্যোম হয়ে পড়ি। গত ৫ আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের ফ্যাসিস্ট সরকার উচ্ছেদ ও বৈষম্যহীনতার স্লোগানের বিজয়ে গঠিত সরকার দায়িত্ব নেয়ায় আমরা আবার নতুন আশায় বুক বাঁধছি। নতুন করে সংগঠিত হয়ে আন্দোলনের বার্তা নিয়ে সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি আমাদের অঞ্চলের উক্ত বাঁওড়সমূহ ছাড়াও দেশব্যাপী বিশেষত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবগুলো বাঁওড় নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর কবল থেকে রাষ্ট্রের সম্ভাবনাময় সম্পদ বাঁওড়গুলোকে উদ্ধার করে প্রকৃত মৎসজীবীদের ন্যাসয়সঙ্গত ও প্রথাগত মালিকানার ভিত্তিতে অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করে বাঁওড়পাড়ের ত্রিশ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করায় কার্য়কর ভূমিকা গ্রহণ করবেন।’

সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা, নতুন দিনের বৈষম্যহীন ও অংশগ্রহণমূলক বাংলাদেশ নির্মাণের যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে, সে অগ্রযাত্রায় অতি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বাঁওড়ের মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তায় ৪ দফা দাবিনামা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিবেচনা করে তা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

সমাবেশে মৎস্যজীবী বাঁওড় আন্দোলনের উপদেষ্টা ও বাঁওড় গবেষক সুজন বিপ্লব দাবি নিয়ে বলেন, অবিলম্বে বাঁওড়সমূহে ইজারা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করে বাঁওড়ে জেলেদের ন্যায়সঙ্গত মালিকানার স্বীকৃতি দিতে হবে। বাঁওড়ে মাছ চাষে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ও জেলেদের সাথে নায্য উৎপাদনের অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় প্রকৃত বাঁওড় মৎস্যজীবীদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি না করে বাঁওড়ে মাছের প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

(এসআই/এসপি/নভেম্বর ০৩, ২০২৪)